ক্ষমতার মদিরায় যখন লোলুপ দৃষ্টি থমকে দাঁড়ায়,
তখন অন্ধকারের অভিসারে সব সাদা আলো কালো হয়ে যায়,
স্বপ্নের অট্টালিকায় জমে ওঠে রক্তজবা মেঘ,
হৃদয়ের নিভৃত কোণে জমে যায় মুদ্রার শব্দহীন হাহাকার।

লোভের সিঁড়িতে পা রেখে যারা আকাশ ছুঁতে চায়,
তাদের ডানা হয় স্বর্ণের, কিন্তু মাটির বন্ধনে বাঁধা,
তারা ছায়া বিক্রি করে, রোদ্দুরের বন্দোবস্ত করে—
তাদের প্রতিটি নিশ্বাসে মিশে থাকে ক্ষমতার সুরা।

ক্ষমতা—সে তো এক মাতাল হাওয়ার নাম,
যার উষ্ণ স্পর্শে মনুষ্যত্ব গলে যায়,
যে হাওয়ার তৃষ্ণায় মরুতে জলধি কাঁদে,
যে তৃষ্ণা মেটাতে যায়, তারই অন্তঃসার শূন্যতায় ডুবে যায়।

যখন প্রতিটি পদক্ষেপে প্রতিধ্বনি ওঠে—
'সব আমার! সব আমার!'
তখন মাটি হয়ে যায় তাদের চরণতলে নত,
সময়ের ঘূর্ণিতে তারা হারিয়ে ফেলে তাদেরই প্রতিচ্ছবি।

প্রতিটি দখলের সঙ্গে সঙ্গে তারা হয়ে ওঠে দখলদার,
দৃষ্টির সীমানায় বাঁধে অগণিত প্রাচীর,
আত্মমুগ্ধতার নেশায় তারা ভুলে যায়—
চূড়ান্ত শূন্যতাই ক্ষমতার একমাত্র উত্তরাধিকার।

যাদের হৃদয়ে লালিত ক্ষমতার লালসা,
তাদের বুকে অনুরণিত হয় মুদ্রার নির্ঘোষ,
তারা মূর্তিতে পরিণত হয় পাষাণের,
তাদের মুখোশে হাসি, অন্তরে শূন্যতা।

সময়ের অতলে হারিয়ে যাবে সোনালী সিংহাসন,
মুদ্রার শব্দ থেমে যাবে মহাশূন্যের নিস্তব্ধতায়,
তখন শুধু রবে—নির্জনতায় প্রতিধ্বনিত ক্ষমতার অট্টহাসি,
আর তার তলানিতে মিশে থাকা অশ্রুর নিঃশব্দ স্রোত।