তোমার জানালায় আজ কোনো আলো নেই,
আলোহীন আয়নার ভাঙা কাচে
জন্ম নেয় আত্মার পরাবাস্তব স্বপ্নগুলো—
এ এক স্তব্ধতার কলঙ্ক, এক নির্জনতার রক্তাক্ত স্মৃতি।

শব্দহীন এক পাথর যেন টুকরো টুকরো করে সময়কে,
ইতিহাসের কঙ্কালে শাসকের বর্বরতা
প্রতিফলিত হয় আয়নার ভেতর—
কিন্তু কে দেখছে? কে শুনছে এই পাথরের কন্ঠস্বর?

রক্তের মত লাল পাতায় জমে থাকে বেদনার ধুলো,
মাটির গভীরে চাপা পড়ে যায় অস্ফুট স্বর;
প্রকৃতি হয় নির্বাক,
তবু তার ভেতরেও গর্জে ওঠে অস্পষ্ট আকাঙ্ক্ষা।

বন্দী সময়ের দেয়ালে প্রতিদিন নতুন ছাপ,
কেউ কি পড়েছে তাদের দুঃস্বপ্নের ভাষা?
এই আঁধারে বুনে থাকে প্রতিটি ছায়া,
প্রতিটি কণ্ঠ হয় বন্দি এক দীর্ঘ নিঃশ্বাসে।

স্বপ্নগুলো কি ছিল?—নাকি ছিল কেবল এক নিস্তব্ধ আয়না,
যার প্রতিফলনে জাগে এক অমলিন রক্তক্ষরণ,
মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা পলাতক মানুষেরা—
তারা কি শাসকের বর্বরতা দেখে একদিন উঠে দাঁড়াবে?

ক্ষয়ের মূর্তি গড়ে ওঠে প্রতিটি বন্দীর জবানবন্দি,
আলো নিভে যাওয়া এই ঘরে সময়ও হয়ে যায় অপরাধী,
নিরব আয়না ভাঙে, ভাঙে ধ্বংসের দোলাচলে,
তবু এক অদৃশ্য আলো ফুঁসে ওঠে
শাসনের কলঙ্ক মুছে দিতে।

তোমার মনের আয়নায় এ দৃশ্য কি জাগ্রত হবে,
যদি পারো একদিন ভেঙে ফেলতে সকল অন্ধকার
আর প্রতিফলিত করতে সেই নতুন ভোর?
অপেক্ষায় থাকে আকাশ,
অপেক্ষায় থাকে ইতিহাসের অমলিন সাক্ষী।