আমাকে গুলি করা হয়েছে,
ননস্টপ গুলি করা হয়েছে,
আমাকে নির্দয়ভাবে গুলি করেছে আমার
কাঙ্ক্ষিত নারী,
বুলেটের পর বুলেট ছুঁড়েছে আমার নিরীহ
বক্ষঃস্থলে।
আমাকে বিষপান করানো হয়েছে,
প্রিয়তমা,আমার অন্তরের ফাল্গুনী
নিজহাতে আমাকে বিষ খাইয়ে দিয়েছে।
আমি ধড়ফড় করা মুরগীর মতো কষ্ঠ পেতে
পেতে হাজারবার মরেছি,
গুরুতরভাবে অসুস্থ রোগীর মতো আমি পড়ে
আছি জরাজীর্ণ হাসপাতালে।
লাঠির আঘাতে আহত মাছের মতো
আমি বিষম যন্ত্রণায় দিনাতিপাত করছি।
আমার ভেতরের মাংস টুকরো টুকরো হয়ে
ঝরে পড়ে গেছে,
আমি জ্বলতে জ্বলতে ক্ষয় হয়ে গেছি,
ছাই হয়ে পড়ে আছি মাটির মধ্যে।
কেরোসিন ফুরিয়ে গেলে চেরাগের আলো
নিভে যায়,
আমি কতবার নিভে গেছি কিছুই জানে না
কেউ।
আমার সারাদেহ খেয়ে যাচ্ছে অগণিত
বিষধর সাপ,
বিষযন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে অসংখ্যবার
বন্ধ হয়েছে আমার হৃদঘড়ি।
সভ্যতার যত বিধ্বস্ত নগর আছে
সব নেমে এসেছে আমার অসহায় বন্দরে।
নারীকে হৃদয়ভরে ভালোবাসার অপরাধে
আমার উপর অত্যাচার করা হয়েছে বারবার,
প্রাণসখা আমাকে নিজের হাতে শতবার
বেত্রাঘাত করেছে।
আমি ডুবে গেছি, ওগো চিরতরে ডুবে গেছি
আকাশের শেষতম রাতের শেষতম চাঁদে।
আমি মরে মরে বেঁচে আছি জাহেলিয়াতের
যুগে,
ইরাকের ধ্বংসলীলা আজো চলে আমার
কোমল সীমাহীন সীমানায়।
আমার হাত-পা নিষ্ঠুর শিকলে বাঁধা,
নেশাগ্রস্থ মানুষের মতো সাড়াশব্দহীন
আমার চুপচাপ অশান্তি।
আমি ফুরাতে ফুরাতে নতুনভাবে জন্মেছি,
আমি জন্মেছি আজন্ম পাপ হয়ে
পৃথিবীর সকল যন্ত্রণা বুকে নিয়ে এই জন্ম
থেকে অন্য জন্ম।
একটা জন্ম পার করতে করতে আমি
বিচরণ করেছি পাঁচ-ছয়টা মলিনত্ব জন্ম।
একটি সুখের জন্ম খুঁজতে গিয়ে
আমি ব্যর্থ হতে হতে হাজারটা জন্মের
কিয়ামত দেখেছি নিপীড়িত চোখ-পাড়ায়।
আমি তোমাকে ভালোবাসতে ভালোবাসতে
ভুলে গেছি দিন আর রাতের পার্থক্য,
তোমার চিন্তায় বিভোর হতে হতে
আমি ভুলে গেছি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নাড়ীনক্ষত্র।
আমাকে দাফন করা হয়েছে শোকেজর্জরিত
সাড়ে তিনহাত মাটির চিরনিদ্রাতুর ঘরে,
আমার আবার জন্ম হয়েছে নতুন কষ্ঠের জন্ম
নিয়ে ওইবার থেকে এইবার।