আমি ! আমি তো সেইজন যে তোমায়
মমতাডোরে বেঁধেছিল,
পরশ পাথর ভেবে
নিরবধি তোমার প্রণয়ে ঘর্ষিত হয়েছিলাম।
আমি সেইজন যাকে তুমি চিরবেদনার মালা ছুঁড়ে দিয়েছিলে, তিলে তিলে আমার
শিরায় শিরায় সৃষ্টি করেছিলে ক্ষতচিহ্ন।
শ্রীনন্দিনী ! আমি তো সেইজন
যে তোমার অশ্রু সহ্য করতে পারতো না,
ছোট ছোট প্রাচীরাঘাতে
রক্তরঙিন পানিতে সিক্ত করেছিলাম কপোলমণ্ডল।
বাহারি রঙের স্বপ্নের আসরে মুখরিত করেছিলে আমায়,
আমার প্রজ্বলিত স্বপ্নীল সাধনার মিছিল
তোমার একটি বুলেটেই নিশ্চিন্ন হয়ে গেল।
প্রকৃতির তামাম সদস্যকে রেখে বলতে পারি--
তোমায় বুকে নিয়ে স্বপ্নের
কাড়াকাড়িতে আমার আমার ভুল ছিল না।
হয়তো অন্তরের নাম না জানা সহস্র
অনুভূতির চাদর দিয়ে,
তোমায় রোমিওসুলভ ভালোবাসাই আমার জীবনপাতার
সর্বনিকৃষ্ট ভুল।
নষ্ট জগতের সহজতম পথের সন্ধান দিয়ে,
তুমি আমায় উপহার দিয়েছিলে ইতিকাব্যের বিপরীত কাব্য ।
সেই কাব্যের প্রতিটি চরণের সুধা পান করে,
মধুরূপী বিষের যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে আমার মৌনতা।
যে বুকে মাথা রেখে
জীবনের বাকিটা কাল পার করে দিতে চেয়েছিলাম
সেই বুকের অনলপ্রবাহে
আমার হৃদয়-কাগজ জ্বলে-পুড়ে ছাই হলো।
অনেকস্বপ্ন আর আশা নিয়ে বানিয়েছিলাম এক নৌকা,
এটি যে আমার লালিত ভালোবাসার
দিবস-রজনীর নৌকা;
ইচ্ছের অতল সাগরে
ডুবিয়ে দিয়েছিলে আমি এবং আমার নৌকা।
আমি উঠবো আবার নৌকাখানি নিয়ে
অবাক কোনো রাতে, রূপালি চাঁদের আলো মেখে,
সেই নিশীথ-ভাতির অপূর্ব আলোয়
তোমার চোখে আচমকা পানি ঝরবে।