ওহে নারী,
স্বাধীনতা অর্ধনগ্ন কাপড়ের মাঝে নয়,
নয় খেয়াল-খুশিতে বাধভাঙা চলা।
তুমি চাইলেই পারো না কখনো
মাংসপিণ্ড দেখিয়ে চলতে।
ময়ূরের মতো পেখম তুলেই
তুমি চাইলে পারো না নাচতে-গাইতে।
এলোচুলগতিসম তোমার নাচেতে
গর্জে উঠবে হিংস্র নেকড়ে।
তুমি তো নাচবে তুমি তো গাইবে,
তবে খুব সাবধানে,নারী।
শামুকের মণি নিরাপদে থাকে
খোলসের অন্তঃপুরে।
ঘোমটার অন্তঃপুরে আন্দোলন তুলে
নারী তুমি দেখিয়ে-বুঝিয়ে দাও
স্বাধীনতা আসলেই কি জিনিস।
কতজন প্রমাণ করলো
কতভাবে কতযুগে।
বনের হরিণ ভয়ে ভয়ে থাকে,
কখন বাঘের দল আসে।
আচমকা আক্রমণ করে বসে
তাদের নীরব চলাচল পথে।
কুশ্রী পরিচ্ছদ গায়ে দিয়ে
খাল কেটে কুমির ডেকো না।
আত্মরক্ষা প্রতিটি মানুষ চাই;
তোমাকে চাইতে হবে,
কারণ তোমার খুব দরকার।
ক্ষুধাতুর নেকড়ের দল
বন-বনান্তে পেতেছে শিকারি আসন।
তুমি হাতিয়ার রাখো পাশে,
তোমার অজানা বিপদের জন্যে,
তরবারি দিয়ে কেটে
টুকরো টুকরো করে দাও
হায়েনার দেহ,পঙ্গু করে দাও লিঙ্গ।
শোনো নারী,
স্বাধীনতা দেহে নয়,
তোমার ভেতরে স্বাধীনতা চাই,
স্বাধীনতা থাক মনের কোটরে।
তোমার ভেতরে বসবাস করে,
অগ্রদূত বেগম রোকেয়া।
নারী, নিজ প্রাণ খুলে দেখো,
লুকিয়ে রয়েছে প্রীতিলতা সেন
তোমার মনের নিরালা সদনে।
প্রতিবাদী জাহানারা ঈমামের রক্ত
তোমাদের শিরায় শিরায়
বহমান তটিনীর মতো
অবিরত বয়ে চলে রাত-দিন।
খুব করে শুনে রাখো, নারী,
অর্ধবস্ত্র পরিবৃতা হয়ে
দেহকে পণ্যের মতো
দেখিয়ে বেড়ানো স্বাধীনতা নয়।
স্বাধীনতা হলো
মননের পথে কত উঁচু তুমি।
মানসিকতায় কতটা উন্নত তুমি।