কৃষ্ণ-কালো অমাবস্যা, তার উপর সারা আকাশ কালো কালো মেঘে ছেয়ে আছে
তিন-চার হাত দূরে তরুণ কয়েকটি গাছ মৃদু মৃদু দুলছে,
ভাঙাচোরা পাকা ভুতুড়ে পুকুর-ঘাট
আচমকা ছুটে আসা শীতল বায়ুতে লোমকূপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে
পঁচা ক্ষুদিপানার গন্ধ, কানফাটা ঝিঁঝি'র চিৎকার
পেছনের ইবাদত খানা থেকে ভেসে আসা হালকা আতরের ঘ্রাণ
পরিবেশকে আরো গা ছমছমে করে তুলেছে,
এই মুহূর্তেই যেন দুষ্টু আত্মারা আমাকে চারদিক থেকে আক্রমণ করবে
এক্ষুণি যেন আমার পা ধরে এক-টানে ছাতিম গাছের ওই ভয়ানক অন্ধকারে বন্দী করে নেবে।
তাও এসব আমাকে কাবু করতে পারলো না।
আমি যেখানে বসে আছি তার সামনে বিশাল জঙ্গল, যেটা পেরিয়ে তোমার বাড়ি,
সেখান থেকে তোমার সুবাস পঁচা ক্ষুদিপানা আর আতর'কে ছাড়িয়ে আমার পুরো বুক দখল করে চলেছে
আর এখানে আমি একা, সঙ্গী কালো অন্ধকার আমার বিশ্বাসের মতো।
জঙ্গলের ফাঁকফোকর দিয়ে তোমার বেলকনির আবছা আলোর বাতিটা দেখতে পাচ্ছি,
বেলকনির কর্ণারে ঝুলন্ত টব থেকে কতগুলি লতা নুইয়ে পড়েছে নিচের দিকে।
জীর্ণ শীর্ণ গ্রীলে তোমার রেখে যাওয়া স্পর্শ ছাড়া ওখানে কিছু নেই।
কে জ্বালায় ওই বাতিটা?
সেই টবে কে দেয় পানি?
সর্বদা যার বিচরণে জায়গাটি পরিস্ফুটিত থাকতো, এতটা বছর পরও সেখানে তার স্মৃতির চিমনিটির যত্ন কে নেয়?
অথচ, ওখানে কেউ নেই!!