যান্ত্রিক কবিতা
— মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী
এখন যন্ত্রেই উৎপাদন হয় শত সহস্র কবিতা!
যন্ত্র চালানোর দক্ষ কারিগররাই হয়ে উঠছে কবি ও মহাকবি!
প্রেসে ছাপা হচ্ছে হাজার হাজার কবিতার বই।
একের পর এক বিক্রিত যান্ত্রিক কবিতার বইয়ে অটোগ্রাফ দিতে দিতে—
এ আই কারিগর ক্লান্ত।
( "যে অগ্নি আত্মাকে দহন করে প্রজ্জ্বলিত হয়ে উত্থিত হন, সে অগ্নির নাম কবি।" )
"প্রকৃত" কবিগণ, বরং কবিতার কাছ থেকে চেয়ে নিন ছুটি।
দিনের পর দিন শব্দের পেছনে ছুটতে হবে না আর
আরবের ঘোড়ার মতো!
নগদ পয়সার জন্য বাজারে খুঁজে নিন কুলির কাজ,
অথবা বৃত্তি হোক ট্রাকে ট্রাকে কর ফাঁকি দিয়ে
আমদানি করা মাল কাঁধে তুলে নিয়ে
বেনিয়াদের গুদামঘরে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা।
পেশাদার কবি পেশাদারিত্ব দেখাবেনই বা আর কোন কাজে?
এতে বরং লাভই হবে—
এতদিন ধরে কবিতার পেছনে যে শ্রম আর সময় নষ্ট করেছেন,
অপুষ্টিতে ভোগা আপনার ছোট্ট শিশুটিকে
কিছু মৌসুমি ফল কিনে দিতে পারবেন।
পারবেন আপনার ঘরের সেই রমণীটিকে,
যে রোগা আর জীর্ণ শরীরে
সস্তায় কেনা কাপড়ের ছেঁড়া অংশটুকু সযত্নে আড়াল করে,
তৈরি করে আপনার জন্য খাবার,
পরিষ্কার রাখে মেঝে, রান্নাঘর ও টয়লেট—
ক্লান্ত, বিধ্বস্ত শরীরে ঘুমিয়ে যাবার আগে
ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় পূরণ করে আপনার অবদমিত কাম।
তাকে একটা ভালো কাপড় কিনে দিতে পারেন।
তার প্লেটে তুলে দিতে পারেন
দিনের পর দিন শাক-চচ্চড়ির বদলে
মাছ অথবা মাংসের একটা টুকরো।
"প্রকৃত কবিগণ," কবিতার কাছ থেকে চেয়ে নিন ছুটি।
তা না হলে—
কবিতাই আপনাদের বলে দেবে ছুটি!