"প্রহসন"
(১)
কবি অকবির মানিনা'ক ধার,ওরা বলে সব ভন্ডামী!
বটে তোরে দাদা,ছুড়িবোনা কাদা,সাচ্চা এমোর মাতলামী।
নিজেই বুঝিনা! কি বুঝাই বল, যা ছিল সব খয়রাতি,
গেঁয়ো,গেছো বলে বন্ধুরা ক'ন,জ্বলুক কবির লালবাতি।
কেউ বলে ওতো- নিয়ম জানেনা,
আমি বলতাম,কিছুই জানেনা!
ধুরঃ ছাই! সব বাদ দিয়ে করি, উপর তলার চামচামি!
বড় ভাই ক'ন, ক্ষেপেছিস ব্যাটা? সবখানেতে দুষ্টামি!
শিক্ষক বলে,কলেজে দেখিনা?বাড়িতে বসিয়া রাজনীতি?
বান্ধবী তাই বেকার বলিয়া,বলে আয় করি প্রেম-প্রীতি।
(২)
বড় ব্যাথা সখা এই বুকে মোর,যা দেখি শুধু তাই লিখি_
অনিয়ম,ঘুষ,ক্ষমতার ঝড়ে,মানবতা উড়ে চারদিকই!
এই দল বলে হরতাল কাল, ওইদল শুধু ধরছে খুঁত,
আমি বললেই বিদ্রোহী হই,নাগরিক মরে হচ্ছে ভূত।
নিন্দুক কহে জেলে পুরো ওরে,
খুব বেশি যদি মাথা-ব্যাথা করে।
ডাক্তার কহে মানসিক রোগী, আইনজীবী ক'ন, ঝগড়াটে!
তাদের থামাতে সংসার ফাঁকা,ফুটোকড়ি নাই মোর গাঁটে।
কবিতা লিখে লাভ নাই তাই,ভাবছি হবো ঘরের জামাই
প্রেয়সীর বাবা নাক সিঁটকায়,ওটা মহাচোর কোন কাজ নাই।
(৩)
সব ছুড়ে ফেলে ক্ষেঁপিয়াছি আজ,কি হয় হবে শেষকালে!
আমার চলা চালিয়ে নিও, বন্ধু কোথাও আটকালে।
তোষামোদি লেখা লিখিনা বলিয়া,তেলতেলারা করছে ফুঁস!
ভগবান মোরে প্রতিভা দিয়াছে,তোমাদের আমি চাইনা ঘুষ।
বিদ্রোহী আমি মায়ের তরে,
জন্ম হলে একাত্তরে!
হয়তো হতাম শহীদ, গাজী-কিন্তু কপাল চটকালে?
অন্যায়েরে নমি-না বন্ধু,কি হয় হবে এই ভালে!
ঘুমন্ত সব বিবেক রে ভাই, বিষদহনে করবো তুষ!
নতুনত্বের ডংকা বাজিয়ে, মানবতার ফিরবে হুশ।
(৪)
বুক থেকে আজো ফুরায়নি ঝাঁজ, স্বাধীনতার একাত্তর,
ফায়দা সকলই লুটেদের দলে,খুঁজে হয়রান কোথায় চোর?
আমি তো বুঝিনা, তলাহীন ঝুড়ি,খুঁজিয়া চলেছি দিক্বিদিক __!
উচিত কথার ভাত নাই, তাই-ওরা হয় সব বৈপ্লবিক।
বুড়োরা ক'ন,পেঁকেছিস ভারি,
পোটলা-গোছা,অতি তাড়াতাড়ি।
এদেশ ছাড়া কোথায় দেখেছো,প্রতিশোধের রাজনীতি?
গলাবাজি করে গলাবাজদের,গলার হয়েছে উন্নতি।
ব্যালট পেপারে সিল দিয়ে দেখি,মামলার হলো সেঞ্চুরি,
ফুলের মতো চরিত্র তবে,মামলা হয়েছে ট্রেনচুরি!
(৫)
পড়াশুনা করে বেকার হয়েছি,বেকার কোটায় চাকরী চাই,
আমার বাবা কৃষকের ছেলে,ঘুষের টাকা কোথায় পাই?
উচ্চবিত্ত পথে খোঁজে ক্ষুধা,নিম্নবিত্ত পায়না কূল __!
মধ্যবিত্ত মাঝ দরিয়ায়, দেখছে চোখে সরষেফুল!
মদারুরা ক'ন অধিকার চাস?
আয়রে খোকা, খেলে যা তাস।
এই যদি হয় সোনার বাংলা,মুখে সোনার চামুচ কই?
মাগো তোমায় ভালোবেসেও আমরা নাকি কেহই নই!
আইন হয় আজ ইচ্ছে স্বাধীন , মুখে মোদের মারতে টেপ!
স্বাধীন দেশে স্বাধীন ভাবে,আমার বিবেক হচ্ছে রেপ!
(৬)
গনতন্ত্রের মুখোশ পরে, রাজতন্ত্র করছে ছল!
যেই লাউ সেই কদুই র'লো,ছাড়লোনা না পিছ শকুন দল!
স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে,স্বাধীনতাই হচ্ছে খুন,
আমরা কেমন কাঁদতে পারি, দেখছে ওঁরা সুনিপূন।
হায়রে অভাগা জাতি মোর!
বন্ধু কি কেউ নাইরে তোর?
খুঁবলে খেতেই জননী তোমার সৃষ্টি হয়েছে বুঝি?
উর্দু,হিন্দি,ইংরেজ গেলো, বন্ধু পেলেনা খুঁজি ।
আজো তোমার সন্তানেরা,পায়নি খুঁজিয়া সুখ!
আজো শত নুর রাজপথে মা, ভেজায় তোমার বুক।
(৭)
রাজপথে আজো অস্ত্র উঁচিয়ে,সন্ত্রাসীদের জয়ল্লাস!
আজো আমার মুক্তি মেলিনি,আজো র'লেম কৃতদাস।
আমার মা-বোন ধর্ষিত হয়,কোথায় দেখাই এমন মুখ?
রুপা,তনুদের কি দেই জবাব?উওর চায় মায়ের বুক।
আমি বললেই রাষ্ট্রদোহী,
আমি তো আর রাষ্ট্রের নহি।
বড় আশা লয়ে বিচার কেঁদেছে, অবিচার শুধু রাঙ্গায় চোখ,
বিবেক হয়েছে পাঁক্কা জুয়াড়ী,আসর হয়ে মর্ত্যলোক ।
অভিশাপ র'লো তাদের উপর,হরণ করে যে বস্ত্র মোর,
দীর্ঘশ্বাসে আর অনুতাপে, বন্ধ হবে তাদের দোর।
(৮)
দূর্নীতি আর সহিতে পারিনা, কলম যদি অস্ত্র হয়!
বিনাশ হোক শত্রুশিবির, সত্যি হোক সত্য জয়।
যারা ভাবে মাগো অন্ধ মোদের,অন্ধ হোক তাদের চোখ
এই লেখা মা তাদের তরে,লিখছি আমি মৃত্যুশোক।
যারা আজো মোরে গোলাম ভাবে,
তারাই আমার জয়গান গাবে।
যেমন গেয়েছে তোমার ছেলেরা,'আমার সোনার বাংলা' মা,
তেমন সূর্য ওঠুক প্রভাতে,রাঙ্গিয়ে তোমার দুটি পা।