"নাট্যমঞ্চ"
ওহে যাযাবর, কোথা রচে গেলে ঘর!
তীর্থে রচিয়া গেলে আপন আর পর।
কেন এই কালান্তরে মিছে প্রতিশোধ মেখে জয়জয়কার,
তবু যেন প্রবোধের দিন শেষে মিলে যায় এপার-ওপার।
হে ক্ষনিকের অতিথি, দেখে যাও কবরের ঐ মাটি ধরে,
কত হাহাকার লয়ে নিয়তি রচে নীড় আপনার তরে।
তবু সে অন্ধকার নগ্নসত্য সুরাপাত্র ধরি,
পিয়ে গেলে পরিহাসে তথাপি শবরী।
তবু ধূসরিত পিরামিড স্বাক্ষী রয় বিরহের অনন্তকাল,
নয়ন পাতে যাহা পাই তাই লয়ে মশগুল হই বেসামাল।
দেখি নাই আপনারে ছুঁয়ে কোথাকার প্রহরের প্রাণ,
নিশ্চুপে গড়ে গেছে তুচ্ছ হৃদয় ভরে মাগিয়াছ ত্রান।
কি সঞ্চয় হেতু বলো অহেতু বিনয়,
কেন এ জন্ম থেকে মৃত্যু সুধাময়।
কি ব্যাথায় নীল হয় সাগরের স্বচ্ছজল দেখনি'কো তাই,
রাশি রাশি অভিমান তবু এই সংসার গেয়েছে সাফাই।
ক্ষণিকের মোহমদে ডুবে রলে অগভীর সুখের নেশায়,
রচে গেলে ভ্রষ্ট সুখ অলীক মরিচীকা শিয়রে ঘুমায়।
কোন এক নিদ্রাহীন অগভীর রাতে,
যদি সন্ধি শেষে চলে যাও মৃত্যুর সাথে।
রেখে যেও সত্য যত, মিথ্যায় যারা আজো রচে নীড়,
জেনো হঠাৎ দিনান্ত শেষে তাহাদের চূর্ণ হবে শীর।
স্বাক্ষী যত শ্মশানের অধপোঁড়া বাঁশ ঐ পোড়া ছাই,
তাহা বলো অন্ধ বিনে নেত্রময় কেবা দেখে নাই?
তবে কি বৃন্তচ্যুত দীর্ঘশ্বাস হানি,
নাট্যমঞ্চ ছেড়ে যাবে নেড়ে হাতখানি।
আহা সেই হাহাকার জীবন যদি হয় পরিতাপময়,
প্রিয়জন সে তো শুভ সময়ের তরে গড়ে পরিচয়।
যতোদূর প্রাপ্য নহে, অবিচারী রয়ে গেল শুধু,
পাশে রলো অনন্ত হাহাকার, যেন মরু ধূ-ধূ!
ঐ ভীত কুমারীর ইতস্তত প্রেমে খুঁজে সান্ত্বনা,
চলে যেও আকস্মিক ভুলে আলোচনা।
যেন নাহি রয় পরিতাপ পরিচয় যেন হয় সুধাময়,
বাঁধিবোনা মিছে এই তুচ্ছ বাহুডোরে যদি নাহি রয়।
কালের অশান্ত ঢেউ জোনাকির ক্ষীণ আলো তবু,
তবুও আমারে স্মরিবে হেথা ভুলে গিয়ে কভু।
গড়ে যেও অট্রালিকা শ্মশানের ছাই,
সত্য মিথ্যা যেথা কোন পরিচয় নাই।
তবু কোন পথিক দিন শেষে যদি ভাবে মুক্ত জলরূপে,
সত্য পথে ভান করে মিথ্যায় তবু চলে চুপে চুপে।
স্বার্থক জন্ম এই পূর্ণ্য ধামে রত্নরূপে তাহারেই হেরি,
মিথ্যার আস্তরনে যাহা সত্য বলে করে নাই দেরি।
সে মহৎ অন্তর ধরনীতে কিসে বলো কম,
মিথ্যার স্বর্গের চেয়ে সত্যের নরক উত্তম।