জাগো বাংলাদেশ
------------------------
জাগো বাংলাদেশ —
দুয়ারে তোমার ক্ষুধার স্লোগান
বাস্তুহারার ক্রন্দন তোমার বাতাসে
তোমার হাঁটাপথ জুড়ে আগুনের ফুলকি
রক্তের দাগ লোভাতুর শকুনের ঠোঁটে!
জাগো বাংলাদেশ —
তোমার বুকে— লাল, নীল, কালো আর হলুদ খবর উড়ে
অগত্যা সবুজের আঁচল পুড়ে!
ভোট হয়, কোর্ট বসে
রায় কেনার হাট বসে - তোমার পবিত্র গৃহে।
জাগো বাংলাদেশ —
তোমার বন্দরে বন্দরে জমেছে আজ ধর্মের বেসাতি।
স্রষ্টার বাগানে ওরা করে হিংসার চাষ,
সুন্দরের পাতাজুড়ে লিখে রাখে ইবলিশি দিনলিপি।
আজও ঘুরে ঘুরে ফিরে আসে 'একাত্তরের প্রেতাত্মা
নষ্ট ভ্রূণের আবাদ করে অবুজ মাতার জঠরে।
ওরা গায়েব বানায় গায়েব শোনায়
গায়ের জোরে আদেশ মানায়
আমরা ক'জন তোমার বুকে বন্দী কলম কয়েদী।
এবারতো তুমি জাগো বাংলাদেশ -
দেখো শানিত চোখ মেলে —
বিবর্ণ মনের যাত্রীরা জ্বেলেছে ক্ষোভের অগ্নিশিখা
নিপীড়িত জনতা তুলেছে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত,
তবু তুমি ঘুমে থাকবে নির্বিকার?
শুনছনাকি পরিবর্তনের তর্জন-গর্জন?
আকাশ কাপছে দুরু দুরু
শূন্য থেকে মহাশূন্যে আজ তারই প্রতিধ্বনি।
তোমার বিবস শরীরে কি লাগেনি তার ঢেউ?
বাজেনি বজ্র নিনাদ হৃদপিন্ডে তোমার?
তবে কেন এ আয়োজন!
কেন বন্দরে বন্দরে যাত্রীরা তোমার গুণছে শুভক্ষণ?
কেন তবে ছিড়েছ শৃঙ্খল, ভেঙেছ বিদেশীর জিন্দান?
জাগবেইনা যদি— তবে কেন নতুন সূর্যের এ অহেতুক সন্ধান?
একদিকে দুর্নীতির শরাবে পূর্ণ পেয়ালা লোভে উপচে পড়ে
লাল সবুজের উঠোনে হাঁটে কামাতুর পুঁজিবাদী!
আরদিকে দেখি লাশের সারি কাঁটাতারে বাঁধা পথ,
ধুলায় লুটায় বসন তোমার— কৃতঘ্ন সন্তান!
তবু তুমি প্রতিবন্ধী হবে বারভূঁইয়ার বাংলাদেশ!
মানবেনাকি মুক্তিকামীর কাঙ্খিত নির্দেশ?
তাই হোক তবে! থাকো তুমি ভাতঘুমে,
চেতনার কয়েন জমা পড়ে থাক স্বার্থবাদীর রুমে!
আমি পেতে দিলাম এ বুক
শহিদের ঋণে ফিরিয়ে দিও আগামী প্রজন্মের সুখ।