লাল ফড়িংটার প্রতি ছিলো দুর্বলতা খুব
দীঘির জলে দাপাদাপি ইচ্ছে মতো ডুব।
গাঁয়ের পাশে বয়ে গেছে ছোট্ট হাতির খাল;
দল বেধে তায় মাছ ধরেছি মেলে ঝাকি জাল।
দুপুর বেলা না ঘুমিয়ে লাটাই, ঘুড়ি নিয়ে;
চৈত রোদে পিঠ পুড়েছি ঘাম ঝরেছে চুঁয়ে।
কোথা আছে পাখপাখালী কোথা আছে বাসা,
পাখীর নীড়ে হামলা করে ছানা নিয়ে আসা ।
ঢেরা কাকুর বাগান ছিলো ফলফলাদি ঢের,
গাছের পাকা ফল খেয়েছি পায়নি কাকু টের।
রস হাড়িটার সবটুকু রস পাট কাঠিতে চুষে,
রস ছাড়া ওই শূন্য হাড়ি থাকতো ঝুলে শেষে।
গুলতি দিয়ে পাখি শিকার করা ছিলো শখ,
আমার ঢিলে মরেছিলো সাতটি সাদা বক ।
পড়া লেখায় ভালোই ছিলাম কমই ছিলো রোল,
আমার নামে বাজতো গাঁয়ে সুনামেরই ঢোল ।
বলতো সবাই এই গেরামের আমিই সুবোধ ছেলে,
জানতো না কেউ হলে যেতাম স্কুল পাছে ফেলে ।
বুঝিনি তো পাশের রুমে বাবা যাচ্ছে ঘুম,
এদিকে তো চলছিলো মোর সংগীত শোনার ধুম।
বাবা এসে উঠান মাঝে আছড়ে ফেলে দিলো,
রেডিওটা আমার কাছে সবচে' প্রিয় ছিলো।
মা তো রেগে বাবার সাথে বক্ বকানি বক্,
ভাঙ্গলে কেন কিনে দিবে ছেলের প্রিয় শখ।
চেনজার কিনে বাবা আমার হাতে দিলেন তুলে,
মনে পড়লে চোখ দু’টি মোর ভিজে আসে জলে।
এখন আমি কিনতে পারি একটা কেন শত,
কিন্তু সেটা হবে নাতো বাবার দেয়ার মতো।
---------------------------------------------------
আগারগাঁও, ঢাকা- তারিখ-০৮ আগষ্ট, ২০১৫]