মানুষের আবাস হলো এ পৃথিবী
পেলো সে স্রষ্টার আশির্বাদ
সেই স্রষ্টা রহিল আড়ালে লুকিয়ে
আর প্রকাশ্য শয়তান জিন্দাবাদ।
এলো ব্যবধান জাত-উপজাতে
মানুষ মানুষেরে হেনে আঘাত
রক্তের দাগ লাগিল নিশানে
ঈশানে থমকে আলো প্রভাত।
রচিয়াছে মানুষ মানুষের কবর
আপনার হাতে কালে কালে
ভাবে নাই তারা জীব নগণ্য
অবিশ্বাসী ছিল ওরা পরকালে।
নীল শাসনের চিল শকুনি
উড়ছে সে তার ডানামেলে
রক্তের হোলি খেলছে মানব
দানবের বেশে বুক ফুলে।
ঘোমটা টেনে যত বিবেকধারী
লুকায় এ লজ্জা মাথা নুয়ে
খাঁচায় বন্দী সিংহের মতো
দিন যাপে ওরা প্যাঁচা হয়ে।
গোধূলির রং দেখিয়া যাহারা
প্রভাতের আশা দেয় ছেড়ে
নিশিতে তাহাদের দেখিবে না আর
দেখিবে তাহাদের রাঙ্গা ভোরে।
চিত্তের আদরে চেতনারা পচন
সুবাসিত বেদনা ঘরে ঘরে
উনুনের উপর বসিয়াছে ঠাকুর
তাই মানুষ মরছে অনাহারে।
------------এই দুনিয়ার পাঠশালা
শিক্ষা এখানে করিতেছে ভিক্ষা
জ্ঞানীরা সেজেছে বোবা কালা।
হতাশার ঘুন করিতেছে খুন
হইতেছে পঙ্গু শত যুব জাতি
বাঁচার জন্য মরিতেছে মানুষ
চিৎকারে তাহার ভাঙ্গে ছাতি।
মরণের বরণে মহা আয়োজন
কবর শ্মশানে চলে বাদশাহী
টাকা হইলে তাহার জ্বলিবে চিতা
বলিয়াছেন কর্তা ব্যবসায়ী।
দেবালয় থেকে হিমালয় অবধি
জমেছে জুলুম আজ জমজমাট
মরে গেলে মানুষ হয়রে পণ্য
কিংবা জ্বলে সে শ্মশান ঘাট।
ঝুলছে তালা দ্বারে দ্বারে তার
অন্তরে আঁটা পাষান সিলমোহর
ভিক্ষার ঝুলি দেখিলে বলে
পড়েছিস কি ব্যাটা আজ যোহর?
পূজার থালায় মেলেনি তূষ্টি
দেবতারা বুঝি তাই নারাজ
ঘৃণার তিলক সিঁদুরে ঢাকিয়া
প্রাণ হাতে নিয়ে তাই দাঁড়াস।
গ্লানি জরা যত যুগের ধারায়
বারে বারে তারা আসে ফিরে
এরই মাঝে বাঁচা কচিকাঁচাদের
ফণি-মনসায় ঘেরা বালুচরে।