বান্ধবী, ভালই দিন যাচ্ছে তোমার
ভরা জোৎস্নায় এখন তোমার গল্পগুলোর ভাগ পায় না নি:সঙ্গ পাখি
অথচ অমাবস্যায় তোমার লাল চোখ পাখির খোঁজে মরিয়া হয়ে উঠবে।
কিন্তু তোমার আঙিনায় পাখি থাকবে না, শুধু পালক পড়ে থাকবে
আঁধারকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া পালকগুলো তুলে নিতে কি দ্বিধাবোধ করবে?
তোমার বিয়ে হচ্ছে, সংসারী হচ্ছো
হাতে বই খাতা কলমের বদলে মেহেদী,
কাঁধে কলেজব্যাগের বদলে সংসারের ভার।
কেমন লাগছে তোমার? আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয়।
অথচ আমি এখনো আমার ওড়না সামাল দিতে হিমশিম খাই!
আমার খুব ইচ্ছে করে আগের মতো তোমার মুখে শুনতে, "মায়িশা, তোর ওড়নাটা ঠিক কর"।
যখন তোমার সাথে বাসে কিংবা রিকশায় করে স্কুল, কোচিং সেন্টারে যেতাম জীবনের গল্প বলতে বলতে,
যখন ফোনে তোমার বিষণ্ণ ভারাক্রান্ত কন্ঠ শুনে আগারগাঁয়ের আগের বাসাটায় ছুটে যেতাম,
তখনো বুঝি নি মহাকালের বুকে আমি কতটা একা।
দুই শালিক দেখে তোমার উত্তেজনায় চেঁচিয়ে ওঠার কথা আমি এখনও ভুলিনি।
কিন্ত যখন দেখলাম তোমার 'আমিহীন' জোৎস্নার উদযাপন বেশ ভালই চলছে,
তখন ওইসব স্মৃতিগুলো এক শালিক দেখার মতোই অশুভ ও যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে।
তোমার জোৎস্না কখনই হয়তো আমার অলিন্দে আর আছড়ে পড়বে না
কিন্তু মনের দুর্বল পাখিটা কেন যেন বলে তোমার কোন এক অমাবস্যায় আমার ডাক পড়বে,
পাখিটা তখন সমস্ত পালক ঝড়াবে তোমার আঙিনায়।
অন্যদের যতই তুমি জোৎস্না বিলাও
আমি কিছু তো ছিলাম, কখনও তোমার!
তাই পালক ঝড়িয়ে সমস্ত স্তব্ধতা ডানায় নিয়ে উড়ে যাব
পালকগুলো কুড়িয়ে নিতেই দেখবে আঁধারের শবযাত্রা যাচ্ছে বুকের নদীতে।
তোমার জোৎস্না হোক হাজার মানুষের, অমাবস্যাটুকুতে থাকুক আমার একচ্ছত্র অধিকার।