(কবি ফররুখ আহমেদের  “পান্জেরী”  কবিতার ছদ্মউত্তরে লিখা)

যেন ফররুখ, আসি অলক্ষ্যে,
ডেকে যায়, ও গো পাঞ্জেরী,
রাত পোহাবার নাই দেরি আর
রাত পোহাবার নাই দেরি।

সেতারা, হেলাল ফের উঠিয়াছে জেগে
আসমান ভরা মেঘ যত ছিলো, সব চলে গেছে ভেগে।
অসীম কুয়াশা কেটে গেছে সব হেরি।
এখনি উঠিবে সূর্যটা। পাঞ্জেরী!
রাত পোহাবার নাই দেরি।

দীঘল রাতের ক্লান্ত সফর শেষে,
এবার আমরা রাঙা দিগন্তে আসিয়াছি বীর বেশে।
আর তুলিবে না মর্সিয়া কেহ।
বলিবে সকলে জয়োগান গাহ।
অস্ফুট হয়ে ডুববে না আর জীবনের জয়ভেরী।
রাত পোহাবার নাই দেরি। পাঞ্জেরী।

পাঞ্জেরী, বাকি দাড়টুকু টেনে।
তরিটাকে কুলে এনে,
তবেই তুমি ফিরিবে আপন ঘরে।
এ রাত পোহিছে হাজারো বছর পরে।
আজ যে মোরা পরম ধন্যধারী।
পাঞ্জেরী, রাত পোহাবার নাই দেরি।

যবে তদবির, তবে তকদির।
যেন নজরুল, তোকে বলে বীর
সদা উন্নত, রাখো তব শীর।
তুমিতো মহান স্বপ্নচারী।
পাঞ্জেরি, রাত পোহাবার নাই দেরি।

অসহায় বুকে প্রাণ যেন জাগে।
আসিয়াছে হেরি বিজয়ের দূত।
কালিমা মুছিয়া করিবে সে পুত।
হইবে আবার সুবাতাস জারী।
পাঞ্জেরী, রাত পোহাবার নাই দেরি।

একাকি রাতের যত জুলুমাত,
জিবনের যত ঘাত প্রতিঘাত,
সকলি গিয়াছে হারি।
পাঞ্জেরী, রাত পোহাবার নাই দেরি।
আর রাত পোহাবার নাই দেরি।

যদি গাফলত চুমি খেয়ালের ভুলে,
দরিয়া মাঝেও ভাবো আছো কুলে,
হবে যে আকাশ মেঘে ফের ভারী।
আরো হবে ঢের দেরি।
সাবধান, পাঞ্জেরী!

মলিন মুখের হাসির ঝিলিক, নিভে যাবে ফের।
বাড়বে দিগুন আর্তনাদ আর বুকফাটা আহাজারি।
হাকিবে সাক্ষি মৃত্যের সারি।
ভোর হতে ফের হয়ে যাবে দেরি।
সাবধান, পাঞ্জেরী ।

অসহায় জনে ব্যাথাতুর হৃদে , প্রশ্নের ঝাপি খুলে,
বলে যদি হায়, ঘুচাবে কে আর,
নিবে কে এ ভার?
থামাবে কে বলো, ক্ষুধিতের রোনাজারি।
হয়ে যাবে ফের দেরি।
সাবধান, পাঞ্জেরী!

উঠি উঠি প্রায় সূর্য্যটা ফের, লুকাবে অস্তাচলে।
তিমির আধার রাত্রি আবার আসিবে হেলেদুলে।
হায়েনার দল নতুন করিয়া , করিবে পায়চারী।
ভোর হতে ফের হয়ে যাবে দেরি।
সাবধান, পাঞ্জেরী!

তোমাদের আশে, পথের ধারে, মুসাফির দল বসি।
অস্তের পথে নাহি যেন যায় তাদের সেতারা, শশী।
তবে যে তাদের ভেসে যাবে ফের জীবনের দারাদারি।
থাকে যেন হুশিয়ারী।
সাবধান, পাঞ্জেরী!

যেন দরিয়ার গর্জন আর বেদনা মাজলুমের,
সাথে কৈফিতের তীব্র ভ্রুকুটি হেরি।
দেখি যেন আজ বিজয় প্রভাত ফেরি।
হুশিয়ার পাঞ্জেরী।