বহুদিন মুখোমুখি বসে চোখে চোখ রেখে কথা হয়না আমাদের,
এই ব্যস্ত নগরীতে হাতে হাত রেখে রক্তে উত্তেজনা অনুভব করে হাঁটবার অবসর নেই, বিলকুল অবসর নেই।
তুমি-আমি আমরা উভয়ে'ই তীব্র ধাবমান যারযার ব্যক্তিগত পথে,
এমন দুঃসময়ে হঠাৎ দেখা হয়ে যাওয়া বড় কাকতালীয় ব্যাপার।
মনে হয় তুমি কোন ঘোরতর স্বপ্ন থেকে উঠে এলে
আর আমি সেই স্বপ্নপুরীর রাজা নিজের পাপতীর্থ- নরকের থেকে বের হয়ে তোমাকে দেখি,
পা থেকে মাথা অব্দি উৎসুক ক্রেতার মতন খতিয়ে খতিয়ে দেখি;
তোমার শরীর এখনো কি অসম্ভব দৈন্য-
মাতালের সঙ্গিনীর মতো,
অথচ তুমি একা, ভীষণরকম একা এক নারী
নিজের স্বতন্ত্র গতি রোধ করে চাঁদ ও নক্ষত্রের নিচে
জীবনের কঠিনতম প্রশ্ন মুখে নিয়ে দাঁড়িয়েছ আজ;
আমি নিরুত্তর, কেবলি নিরুত্তর নত মুখে
তোমার নিভৃত শরীর লক্ষ্য করে এগিয়ে যাই;
ভেবেছি সব ক্লান্তি আমাদের দুইজোড়া চোখের জলে ভাসিয়ে দিয়ে-
দীর্ঘ-কান্নার রোল শেষ করে
নিঃশব্দে দুজন দুজনের মুখ চুম্বন করে জড়িয়ে ধরে
আরও একটি কান্নার মহোৎসব শুরু করবো;
কিন্তু না, তোমার চোখ বেয়ে লবনাক্ত গড়ায়
তবু পাষাণের বুকে ক্রোধ ও ঘৃণার তরবারি শানিত হতে থাকে; প্রেম নেই? আমার রক্তের ভালোবাসা নিংড়ে দিয়েছ কোন মাতালের পেয়ালায়?
এবার নিজের নিস্ফলতা ভুলে গিয়ে আমাকে দেখো, অত্যাচারী স্বৈরশাসকের মতো শুধু আমাকেই দেখো?
তুমি নির্দোষ, আহা কি নির্দোষ অপরাঙ্মুখ তোমার! নিষ্পাপ শিশুর মতন খেলাচ্ছলে অন্ধকারে লুকায়।