মানিনা
তুমি আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখো লোহার শিকলে,
কেনো?
কেনো আমার বুক থেকে কেড়ে নেও মানচিত্র?
আস্তিন থেকে ভূগোলক, সোঁদা গন্ধময় মাটির পৃথিবী?
কেনো আমার সজনের ডাল গুলোর স্বাধীনতা
খর্ব করো বারবার? কেনো?
তোমাদের কাঁটাতার আমি মানিনা
তোমাদের ধর্মশালায় লুকিয়ে থাকা রাজনীতির পাঠকে
আমি ধিক্কার করি বারংবার
তোমাদের পতিত বিশ্বাসের বুকে লাথি মেরে
পৃথিবীর একচ্ছত্র মালিকানা চাই
এ কাঁটাতার আমি মানিনা।
পাখির জন্যে যে কাঁটাতার অদ্যাবধি তৈরি করতে পারোনি
প্রজাপতির রঙিন পাখা বিদ্ধ করতে পারেনি কোনো লোহার পেরেক
আটকাতে পারোনি বন্যপ্রাণী, সরীসৃপ
একটি পিঁপিঁলিকাকে আটকে রাখার মুরোদ নেই তোমাদের
মানুষকে আটকে রাখার এ দুঃসাহস তোমাকে কে দিয়েছে? মানুষ?
আমি মানিনা
আমি মানিনা দেশ কোনো কারাগার হতে পারে,
আমি বিশ্বাস করিনা,
পৃথিবী কোনো অনিষ্কণ্টক ভূমি
আমি বিশ্বাস করিনা মনুষ্য সৃষ্ট পৃথিবীর কোনো
সিমান্ত হতে পারে,
ভালোবাসার কোনো সিমানা থাকতে নেই
কোনো প্যানডোরায় আটকে রাখতে পারেনা অনুভূতির বিমূর্ত চিৎকার।
দেখো, তোমার কাঁটাতার আটকাতে পারেনি আকাশের মেঘমালা, বৃষ্টি বরিষণ,
আটকাতে পারেনি পাহাড়ি ঝর্ণা, জলপ্রপাত,
সমুদ্র প্রবাহ,
আটকাতে পারেনি সাইক্লোন, টর্নেডো, লু, চিনুক ঝড়
বসন্তের মৃদু সমীরণ,
আটাকাতে পারেনি প্রকৃতির অপার মহিমা।
তবে কেনো নিরপরাধ মানুষকে এ নির্মম বিতংসে বাঁধো?
কেনো আটকাও?
তোমাদের রাজনীতি আর ধর্ম মিলে তৈরি করেছো রাষ্ট্রযন্ত্র
আর কিছু নিছক সম্প্রদায়,
কিন্তু আমারা মানুষ
আমাদের রাষ্ট্র হচ্ছে পৃথিবী
সম্প্রদায় হচ্ছে মনুষত্ব
অনুভূতির নাম ভাষা
আমরা এ বিশ্বের নাগরিক
আমাদের ভালোবাসার নাম বিশ্বজনীনতা।
সুতরাং আমরা বার্লিন প্রাচীরের মতো
ভেঙে ভেলতে চাই পৃথিবীর সব ব্যূহ প্রাচীর
সব কাঁটাতার উপড়ে ফেলে ঘোষণা করতে চাই
সসীম পৃথিবীতে সীমাহীন সিমান্ত শব্দটির চির বিলুপ্তকরণ।
কারন, পৃথিবী আমার
আমি এই অগ্নিদগ্ধ পৃথিবীর অভীষ্ট সন্তান
পৃথিবী আমার অহোরাত্রির শ্রমের নির্যাস
আমার ঘাম, রক্ত, হাড় দিয়ে তৈরি হয়েছে এর প্রতিটি নির্মান
সুতরাং আমার গড়া পৃথিবীতে আমি কোনো সিমান্ত মানিনা
মানিনা, মানিনা, মানবোনা।