এক অদ্ভুত শহরে তোমার-আমার বসবাস
এই ঢিলেঢালা রোদের শহরে; এখানে অসংখ্য রাজহাঁস
তাদের পাখনা দিয়ে রোদের শরীর ঢেকে রাখে
বাতাসে ছড়ানো লাল-নীল আলো গায়ে মাখে;
তাদের ডানায়-পাখনায় আলোর রুপালি ইলিশেরা খেলা করে
আমি সে আলোর খোলা বুকে যাই উড়ে-দূরে-
শহরের এ-মাথা ও-মাথা- চতুর্দিকে;
ঘোলাটে আসমানের গায়ে এঁকে
ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির রঙে-মাখা অগণন ছবি
হয়ে যাই কবি এক-বারেবারে খাই খাবি-
আঁধারের জলে -চোত-বোশেখের নাবি জলে-
ভেসে যাই- হাঁটুজলও জোটে না এ-কপালে।

এই এক অদ্ভুত শহরে আমার আবাস
বেহুলার মতো উদাস-অর্জুনের মতো বনবাস-
যেন দ্রৌপদীর অভাবে-খেয়ালে ডুবে থাকি
পাশে ঘুমায় অন্ধকারের প্রেত- তার সাথে মাখামাখি-
ভয়াল অন্ধকারের সাথে- আর সব ভেসে যায়
দূরের খেয়ায়-গাঙুরের জলে; শুধুই শ্মশানের চিতায়
জেগে থাকি- বাঁশি আর বেহালায় সুর তুলি সে নির্জনে-
গৌণ তানে তান ধরে মৌন মনে জনে-জনে
সেই সুর বিলি করি-শহরের অলিতে-গলিতে;
আশ্চর্য এ শহরের পথে-পথে
ঘুরি নিরুদ্দেশ-নিরুদ্বিগ্ন-নিঃসংকোচ-নির্দ্বিধায়
অর্জুন যেনবা-যেন অকূল-পাথার ছোঁয়া  হাওয়ায়
আমি পথ চলি-পথে-পথে দৈত্য-দানবেরা ঘোরে
আমি পথ চলি-তারাও চলে আমার আঙুলের কড়ে-কড়ে।