অলক্ষ্যের থেকে এসে
অলক্ষ্যের জলে যাই ভেসে,
একবার পাই, পেয়েও হারাই
দীর্ঘশ্বাসের শরীরে চাবুক চালাই।
একবার ডুবি একবার ভাসি
বৃথা ভাবনায় অযথাই হাসি,
ফের জেগে উঠি পাওয়ার আকাঙ্খায়;
হাওয়ায় হাওয়ায়
কোথায় সে কত দূরে
দ্রৌপদীর নীলাভ শাড়ি হাওয়ায় ওড়ে।
তার সৌরভ আসে ভেসে,
বাতাসের গাত্রে তার গায়ের গন্ধ রয়েছে মিশে।
জননীর কথা ফেলতে পারি নি;
তাই স্বয়ম্বর সভা হতে জয় করে আনা পাণি
তুলে দিয়েছি যে অন্য ভ্রাতাদের হাতে,
স্বপ্ন-ঘুম শেষে জেগে উঠতে পারি না ভোরে-একসাথে।
দীর্ঘ রাত এপাশ-ওপাশ করে কাটে,
দিনও দীর্ঘ যে, দীর্ঘ সেই যাত্রার শকটে
আমার প্রতত আয়ুষ্কাল ক্ষয়ে যায়। ক্ষয়ে যায়,
নারদের বারো বছরের ভাগ ও বাটোয়ারায়।
প্রিয়তমা দ্রৌপদী, দেখো এই বনবাস
কেমন নিষ্ঠুর; চারিদিকে অশুঁচি প্রেতের বসবাস।
অর্জুন আমি তবুও ভয় পেয়ে যাই;
একাকীত্ব আর অন্ধকার আত্মার লড়াই
চলছে হেথায়; গাছে গাছে পাতায় পাতায়,
দিবস-রাত দুঃখের জল দেখো সাঁতরায়।
একরত্তি একবেলা
যার মুখচ্ছবির দর্শন না পেয়ে হই উতলা-
তার বিহনে বারো বছর দীর্ঘ বনবাসে
কেমনে কাটে যে বেলা; হা-পিত্যেসে
আর হাহাকারে-নৈঃসঙ্গে বেড়াই ঘুরে
বিধুর-বিমর্ষ ক্ষেত-মাঠ-চরাচরে।
ক্ষেতের আইলে
কুয়াশায় ভিজে ভিজে হাল ঠেলে
যে কৃষক পেঁয়াজ বুনিছে
আমি যেন তার মতো-তারই মতন-ঘাড় গুঁজে
রয়েছি যে, আঁধারের জলে
সে কোন তৃষ্ণার জাল ফেলে
তুলে আনছি কেবল অন্ধকার-
ধৃতরাষ্ট্রের পুরোনো শুন্য ভিটার আঁধার।