সরে দাঁড়ালাম পেছনে খানিকটা।
ছোট্ট একটা যাত্রী ছাউনি,
ঠাসা-ঠাসি করে দাড়িয়ে-বসে সব।
বৃষ্টির হিম শীতল পরশ ছুঁয়ে যাচ্ছে।
বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ অদ্ভুত এক ছন্দ তুলেছে,
চোখ বন্ধ করে বৃষ্টির গন্ধ নিচ্ছিলাম।
হঠাৎ,
“মাফ করবেন, একটু সরে দাড়ান”।
আমার চোখ তখনো বন্ধ,
মনে হলো পরিচিত এক কণ্ঠস্বর।
ভুল শুনলাম নাতো?
“একটু সরে দাড়ান না”!
এবার খানিকটা বিব্রত।
একটু সরে দাড়িয়ে পেছনে তাকালাম,
শত জনমের পরিচিত এক অবয়ব।
ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস গিলে বললাম-
‘দুঃখিত, না চাইলেও অসময়ে খুব কাছে চলে এসেছি’।
আমার কণ্ঠস্বর চিনতেও তুমি ভুল করনি,
চোখ তুলে তাকালে।
চোখে চোখ পরতেই উঠে দাড়ালে,
বুঝলাম ঝড় বয়ে চলছে তোমার ভেতর,
কয়েক যুগ আগের সেই অপ্রত্যাশিত ঝড়।
তোমার ঠোঁট তখনো কাঁপছিল,
কিছুক্ষনের চেষ্টায় বের হলো দুটি শব্দ-
“কেমন আছো?”
যদিও জানি উত্তরটা তোমার জানা,
তবুও দায় সারা উত্তর দিলাম-
‘শেষ দিন যেমন রেখে গিয়েছিলে’।
তুমি চোখ সরিয়ে নিলে,
আমার দৃষ্টি অনেকক্ষন ভেজালাম বৃষ্টিতে।
কি জানি, চোখের কোনেও জল এসেছিলো কিনা!!
তুমি তখনো চুপ।
এমনই এক বৃষ্টি স্নাত দিনে
তুমি শুনিয়েছিলে মন ভাঙ্গা গান।
জোর করেই নিরবতা ভাংতে চাইলাম।
অনেক কথা জমা ছিলো,
আজ সব বলবো।
সবে বলতে শুরু করবো, তুমি বললে-
“আজ যেতে হবে, ও চলে এসেছে’।
হয়তো সৌজন্যবোধ থেকেই ধরতে গেলাম ব্যাগ।
বুঝতে পেরে আগেই দখলে নিলে, বললে-
“না থাক, ধন্যবাদ।
এতোটা পথ যখন একা বইতে পেরেছি,
বাকি জীবনটা তোমাকে ছাড়াই বইতে পারবো’।
থমকে গেলাম,
যদিও আমাদের কারোই
থমকে যাবার কথা ছিলো না।
থমকে তো আমরা যাইও নি!
তুমি চলছো তোমার মতো,
আর আমি আমাকে নিয়ে।।