হাত দু’খানি কোমলতা হারিয়েছে ক্রমে
কতবার যে ধরিত্রী অর্যমা ঘুরেছে চক্রে!
জগত-সংসার সতত বহমান
দু’খানি হাতের চণ্ডভাবও চলমান।
শুরুর দিকে বলাই স্যারের জোড়াবেতের বাড়ি
তালুর ঠিক মাঝখানটায়, সপাং সপাং।
এরপর, মসলা পেষার আঘাতে কাতর্য
হলুদ-মরিচের তীব্র গন্ধে ঝাঁঝালো এখনো।
খুন্তি-চটার নিত্য টানাটানি অবশ্য-শত্রু
ছিটকে তেলের ছোট-বড় ফোসকা-দৃশ্য।
আলু-পটোল-পলাণ্ডের খোসার ’পরে
চাকু-বঁটির ঘটনাবহুল অত্যাচারে
কালশিটে দাগ আঙুলের পাড়ে পাড়ে।
কখনো বাসের হ্যান্ডেল ধরা
স্টিয়ারিং খামচে তূরীয়-লড়া,
ফাইলের স্তুপ নাড়াচাড়ার দ্যোতনা
থেকে থেকে পেপার-কাটের সুক্ষ্ম যন্ত্রণা।
মাউসের বিরামহীন ক্লিক ক্লিক
পুঞ্জীভূত তীক্ষ্ন দৃষ্টি পিক্সেলের দিক
রিভলভিং চেয়ারে প্রায়-নিথর দেহে
স্কন্ধ-অসাড় হয়ে যাওয়া বেদনানুভূতি।
তবুও! এই নিস্তব্ধ নিশুতি নিশিথে
শৈত্যের প্রবল দখলের আড়ম্বতায়,
মায়ের জড়ায়ুতে কুঁকড়ে থাকার মত
কম্বলের নীচে অসহায় আত্মসমর্পন।
অশান্ত হৃদয়ে তীব্র আকুলি-বিকুলি
ঋদ্ধ কোমল-কঠিন হাত দু’খানি
পালকের মত ছুঁয়ে ছুঁয়ে পরশ বোলাবে
ঊষর মরুর ধুসর ক্যাকটাস কুঞ্জে
জগতের সব ভালবাসা জড়ো করে।