স্থিরীকৃত চেয়ারখানি, টেবিলের সেই নির্দিষ্ট কোণ
স্থানুর বসে অহরাত্রি, যেন কালের অলিখিত নিয়ম।
খরা আঁখি ভিজে উঠে হঠাৎ-বন্যার জলে
বেয়াড়া হাত মুছে ফেলে অতি সন্তর্পনে।
চৈত্রশেষের তপ্ত দুপুরে ঝুমবৃষ্টি যেমন
প্রকৃতি সহসাই শুষে নেয় এমন।
কষ্টে কষ্টে কী কাটাকাটি হয় না?
আর কত না-ঘুম পার করা রাত?
অন্ধকারে তোমাকে দেখার বাত
তৃষ্ণার্ত স্বপন খোঁজে পেলব হাত।
মন্বন্তর শরীরে অশনার আস্তরণ
স্নায়ুজুড়ে কষ্টের চিনচিন বিস্তরণ।
কতদিন মাকে না-দেখার কষ্ট!
জন্মভূমিকে ছুঁতে না-পারার কষ্ট,
মনের সাদাচিল ডানা মেলে না
ভাষার সীমবদ্ধতা দূর হয় না,
অব্যক্ত কষ্টরা দলা পাকিয়ে থাকে
হৃদয়-গহিনে নীল ভাস্কর্য আঁকে।
করাল গ্রাসে অবরুদ্ধ সুতীব্র হাহাকার
কাচের মতন করে, ভেঙ্গেচুড়ে একাকার।
টুকরোগুলো কুড়িয়ে পুনরায় হবে সৌধ
আছে কোথাও? হীরে গড়ার যন্ত্র ভৌত!
বরং কষ্টের আগুন-বরফ ঠেলে বেরোই
অঙ্কুরোদগমনে শতগ্রন্থি বাধা পেরোই,
তুলি শির সুউচ্চে, ভুবন-গগন ছাড়িয়ে
গড়ি পীঠ উত্তুঙ্গে, আরশ-কোরশ মাড়িয়ে।
তখন নির্ভার আমি কষ্টের নীল সমুদ্রে
পোড়া মাটির চাড়া ছুড়ে দিয়ে খেলব-
কষ্ট-জলের নিশ্চলে ব্যাঙ-লাফানি খেলা।