বনানীকে দেখলে প্রভূত হিংসে হয়
কেমন মায়ামমতায় জড়াজড়ি করে আছে।
ক্ষুদ্র স্বর্ণলতা
মাঝারী তেঁতুল
বিশাল অশ্বত্থও ডালপালা ছড়িয়ে।
আষাঢ়ী লতা বাড়তে বাড়তে সুউচ্চ বৈলাম ছুঁয়েছে
হেলে পড়া বকুলের গায়ে অর্জুন নুয়ে পড়েছে,
হিজলের শাখা নিত্য চাপড় দেয়
নিকটের ঐ বকুলতলায়।
শিউলিরা ঝরে পড়ে আলগোছে
বনময়ী আঁচলে ঢেকে রাখে তা।
চামেলীর রেণু ভাসতে ভাসতে বাতাসে
জলের প্রবাহে শত শত নব জীবন
পাখির ঠোঁট থেকে উড়ে আসা খেজুরবীজ
বনময়ী সামলে রাখে সব
তাঁর শীতল ছায়ায়।
বনময়ীই ওদের শিখিয়েছে
শব্দহীনতায় বাক্যালাপ।
তাই বৃক্ষেরা কথা বলে
বৃক্ষেরা হাসে
বৃক্ষেরা কাঁদে,
নিঃশ্বব্দ কথোপকথন অবিরাম।
রাগ নেই ওদের, ক্ষোভও নেই কোন
অলৌকিক সহাবস্থান।
বনানী হতে ইচ্ছে করে ভীষণ
বনময়ীর হাতে হাত রেখে গড়ে নিব-
পাষাণপূরীকে এঁদোকাাঁদায় ভরে দিব,
কোলাহলকে শব্দহীনতায় মেখে দিব।
উন্মত্ততা থাকবে না সেখানে,
কুশাসনের বিষবৃক্ষ উপরে যাবে,
অশান্তির ফুল শুকিয়ে যাবে,
শুধু, তুমি আর আমি, বনময়ী।
অকূল বিষাদে ভাবি সর্বদা
বনময়ীর আঁচলে ঢেকে দেই মিথ্যে সভ্যতা।