এসেছে শীতকাল, পড়েছে গাঁয়ে পিঠাপুলির ধুম,
ব্যস্ত গাছি— রস পাড়তে চোখে আর নেই ঘুম।
রস আনতে মাঠ পেরিয়ে খেজুর তলায় গিয়ে,
কুয়াশা-ঘেরা পথে কাঁপে গাছি, চাদর গায়ে দিয়ে।

কনকনে কাঁপুনি শীতে ভোরবেলা,
দলে-দলে কুহেলিকা—
সূর্যটা মুড়ে নিয়ে করছে খেলা।
নিদারুণ রূপে আজ কুয়াশাময়ী ধরা,
দলবেঁধে ঘুরে তারা—
পাড়াময় ফেলেছে সাড়া।
যেন, লজ্জাবতী বধু; ঘোমটা মাথায় দিয়ে,
সূর্যরাণী আজ সকালে পালিয়ে গেছে দেশ ছেড়ে!
রসের মাছি, পিঠার গন্ধ, সরিষা ফুলের হাসি,
ছোট্ট মানিক হেসেছে আজই, এসেছে যে তার পিসি।

বিকেল বেলায় পাতা কুড়িয়ে, সাঁঝ-রাতে দস্যিদলে,
গোল হয়ে বসে আগুন জ্বালে—
অগ্নিভয়ে শীতমামাজি কোথায় যে তিনি যান চলে!
রসের গন্ধে ঘুম ভাঙলে দস্যিদলপতি—
চুপি চুপি গিয়ে জাগিয়ে তোলে আরো কতক সাথী।
দস্যিদলের নিশান, কোন গাছে রসে ভরা হাঁড়ি!
মাঠ-পরে পাশাপাশি, গোটাবিশেক খেজুর গাছের সারি।

আজ গগনপানে কালো মেঘের যায় না দেখা পাওয়া,
হলুদ ফুলের কোল ঘেঁষে আজ বইছে উদীচীন হাওয়া।
ভোঁ ভোঁ করে মধুকর এসে সেই ফুলেতে বসে,
গান শুনিয়ে বিনিময়ে নেয় ফুলের মধু চুষে।
ক্ষুরধারা বাতাসে আজ নেই নিদাঘ-তেজ,
শীতে বয়ে এনেছে ধামে আনন্দ-আমেজ।