প্রদীপ নিভু নিভু অন্তিম বাসর নীল সমুদ্র তীরে,
যুগ যুগ ধরে চলেছি আমি তপ্ত বিশাল বালুচরে।
ক্লান্তিহীন পদে অবিরাম বেগে চলেছি প্রতি প্রহর,
মলিন অবয়বে ভিখারির বেশে নেই কোন আড়ম্বর।
আমি যে সাথীহারা এই অবেলা নীল সমুদ্র তটে,
আছে মোর কাছে শুধু একটি ভেলা বাঁধা অশ্বত্থ তলে।
ঝির ঝির রবে স্বকরুন সুরে মিনতী করেছে বায়,
পিট পিট করে সমুদ্র সৈকতে হাহাকার করে যায়।
নিশীথ অন্ধকারে বিপুল প্রত্যাসা ঝরেছে সাগর স্রোতে
কৃষ্ণ শৈবালের কারাগারে পড়িয়া রহিয়া রহিয়া মরে।
আমি পথ যাত্রী বলে দাও ধরিত্রী হইবে কেমনে পার
অচীনপুরে ডাক এসেছে বিশাদের ছায়া ঘনায়েছে কাছে
হতে হবে পারাপার।
চারিদিকে শুধু ধু-ধু প্রান্তর নেই জনমানবের লেশ
ধুসরের ধোঁয়া রয়েছে বিক্ষিপ্ত দৃষ্টির প্রান্ত দেশ।
যত হাটি সুমুখে চোখে আসে নিমিষে শুধু বালুকার স্তুপ।
বিজন বিহনে মরীচিকা সম নহে সুন্দর অপরুপ।
সাগর বক্ষে অশান্ত গর্জন করেছে অভিসার যাত্রা
প্রিয়ার সুরায় বুদ হবে তায় চলার নাহি যেন মাত্রা।
আমি যে নীরব নিথর দর্শক হাতে বাউল বাঁশি
যদিও একা তটে এই সমুদ্র পথে হে অসীম তোমায়
বড়ই ভালবাসি।
নীল সাগরের দিগন্ত সীমায় আকাশ ছুঁয়েছে মাটি
লক্ষ ঢেউয়ের পরশ পেয়ে মাটি হয়েছে তাই খাঁটি।
অনেক দুর পথে ঐ দেখা যায় মোর নিঃসঙ্গ ভেলা
করুনার চোখে তাকিয়ে আছে সে বড়ই একেলা।
বাঁধা নেই আর শক্ত রজুতে সেই অশ্বত্থ তলে
প্রবল বাতাসে অকৃপন তরঙ্গে কাড়িয়া নিয়াছে জ্বলে।
একমাত্র তরীখানি চলিল নিমিষে গভীর মাঝ দরিয়ায়
দিশেহারা হয়ে বিভিষিকা দেখি আমি যে নিরুপায়।
কত প্রহর অগনিত ক্রান্তি ঝরিয়া পড়িল নিঃশেব্দ
বসিলাম ধ্যানে যদি থাকে ভালে পাইব তরী কোন এক কালে।
এমনি করিয়া রহিব চিরকাল শত শত শতাব্দী
বাউল বাঁশি মরমে হানিবে আমি যে সাগর পাড়ের যাত্রী।