আধুনিক বাংলা কবিতা অসংখ্য শক্তিমান কবির গবেষণা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার ফল । বিশেষ করে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত প্রভৃতি কবিদের হাতে বাংলা কবিতার বিশেষ সমৃদ্ধি ও সমুন্নতি ঘটেছে । সনেট সম্পর্কে অনেক জ্ঞানী ও বিজ্ঞ কবি প্রশ্ন তুলেছেন । ইতালিয়ান কবি পেত্রার্ক ও ইংরেজ কবি শেক্সপিয়ার প্রবর্তিত ইতালিয়ান সনেট ও শেক্সপেরিয়ান সনেট,সনেটের আদিম রূপ ।বাংলা ভাষায় কবি মধুসূদনের হাতে এই সনেট পরিচিতি লাভ করে । সনেটের আন্ত্যানুপ্রাস বিভিন্ন হলেও গঠন প্রকৃতি একই । একটি মাত্র অনুভূতি বা অখন্ড ভাব কল্পনা নিয়ে বিশেষ ছন্দ রীতিতে রচিত চৌদ্দ বা আঠারো মাত্রা বিশিষ্ট চৌদ্দ পংক্তির কবিতাকে সনেট বলে ।সনেটের দুটি অংশ । প্রথম আট লাইনকে 'অষ্টক' এবং পরবর্তী ছয় লাইনকে 'ষটক' বলা হয় । আধুনিক অনেক কবিই (বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ সহ ) সনেটের গঠন রীতি বা মিল বিন্যাসের নিয়ম পুরোপুরি মেনে সনেট রচনা করেননি । তারা সনেট রচনার ক্ষেত্রে কিছুটা স্বাধীনতা গ্রহণ করে এর কঠিন বন্ধন শিথিল করেছেন এবং এতে নতুনত্ব এনেছেন ।সনাতনী সনেট পদ্ধতি আদর্শ হিসাবে বিবেচিত হলেও আমি কোন কোন কবিতায় নতুন মত অনুসরণ করেছি । অষ্টক, ষটক এবং চৌদ্দ ও আঠারো মাত্রা ঠিক রেখে সনেট রচনা করেছি । কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ইতালিয়ান সনেট ও শেক্সপেরিয়ান সনেটের মিল বিন্যাস অনুসরণ করা সম্ভব হয়নি ।
বাংলা কবিতায় এখন অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে । অনেকে আবার আন্ত্যানুপ্রাস না দিয়েও সনেট রচনা করছেন । কাব্য ক্ষেত্রে এই নতুনত্ব সমৃদ্ধির পথ খুলে দিতে পারে । আমি পুরাতন নিয়মের অনুসারী হয়েও নতুন প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই ।