সিঁড়ি ভাঙা
- মণীষ চক্রবর্ত্তী
গ্রামের স্বাস্থ্য শিবির
রিসেপশনে নাম লিখছেন
এক সুবেশা নারী।
চোখ না তুলেই প্রশ্ন করলেন
আপনার নাম ?
বললাম, 'অনীশ'
তার চোখে সন্দেহ
আই কার্ড দেখালাম।
কার্ডের ওপর চোখ বুলিয়ে নিশ্চিত।
মধুদার চায়ের দোকান
একভাঁড় চায়ে বিতর্কের তুফান
কম্যুনিজম বনাম গণতান্ত্রিক কাঠামো
পেছন থেকে একটা মিষ্টি গলা
কমরেড আপনি কি চা খান না ?
পাশের থেকেই একজন বলে উঠল
"নারে অনীশা।কমরেড শুধুই বিড়ি টানেন।"
"আজকে একটু হোক
অন্তত আমার অনুরোধে ।"
ভাঁড়টা নেওয়ার সময় একটু আঙুলের ছোঁয়া।
পঁচিশে বৈশাখের শোভাযাত্রা
সামনের সারিতে অনীশা
এক চৌমাথার মোড়ে তার গলায়
"কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া -"
ভীড়ের মাঝে চোখে চোখ পড়ল
একটা অন্য রকম চাহনি
আবার চলা শুরু।
শোভাযাত্রার শেষে কখন যেন বিদায়ের ক্ষণে
হাতে হাত মিলেছিল এসে
বলেছিল," বাইশে শ্রাবণ আসবেন কিন্তু। "
বাইশে শ্রাবণ কবি প্রণাম।
একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখলাম
শেষ করলাম কবির কথা দিয়ে
"আশা দিয়ে ভাষা দিয়ে তাহে ভালবাসা দিয়ে
গড়ে তুলি আমার মানস প্রতিমা। "
অনীশার চোখ চকচক করছে।
অনুষ্ঠান শেষে সবাই একে একে চলে গেলে
পাশে এসে বসে অনীশা।
আমার হাত মুঠোয় তুলে নেয়
আনমনে কিছুক্ষণ আঙুল নিয়ে খেলা করে।
হঠাৎই বলে ওঠে নীচুস্বরে,
তুমি আমাকে 'পিকু' বলে ডেকো।
শুনে চমকে উঠলাম।
-কেন ?
-আমার বাবাই শুধুমাত্র এই নামে ডাকতো।
-আমিই বা কেন ---
তুমি কি এটুকুও বোঝ না কমরেড ?
মেয়েদের কাছে বাবার পরে
কে সবচেয়ে বেশী আপন হয় ?
চোখে তার খেলে যায় দুষ্টু হাসি ----