একদিন তো সবকিছুই ছেড়ে চলে যেতে হবে,
তবুও কেন রোজ কিছু না কিছু ছেড়ে যেতে বলা।
এই এক আশ্চর্য ঠেলাঠেলি খেলা
প্রতিদিন ভোরের আলোয় দূরে ঠেলে রাখি তোমাকে।
প্রতিবারই দাও রাতের আঁধারে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি।
তুমি তো জান আমাদের
প্রতিটি জীবন ছেড়ে যাওয়ার একটা খেলা
পুরোপুরিই ছেড়ে যাওয়ার আগে
অনেকগুলো ছোট ছোট ছাড়া।
প্রথমে ছাড়া মাতৃগর্ভের আঁধার,
তারপর স্কুল কেড়ে নিল শৈশব
স্কুল ছেড়ে গেলাম চাকরীতে,
একদিন চাকরিরও হবে অবসান ।
তখন ?
তখন ধীরে সুস্থে এসো তুমি
তোমার সাথে বাঁধব ঘর চিরন্তন।
আমি তো কোন তথাগত নই যে
আড়াই হাজার বছর পেরিয়ে গেলেও
পৃথিবীর বুকে ধ্বনিত হবে আমার নাম ।
নই কোন নদী যে আমার থাকবে
সহস্র বছরের প্রবাহমানতা ।
মাঝি,মাল্লাদের গলায়
ভেসে বেড়াবে আমাকে নিয়েই
বাঁধা কোন ভাটির গান।
হিমালয় তো কোন ছাড়
কোন ছোট্ট টিলাও নই যে
লক্ষ বছর কেটে গেলেও
আকাশের দিকে চেয়ে থাকব।
নই কোন যোগী মহাপুরুষ
নেই কোনরূপে অমরত্বের আকাঙ্খা
অথবা মোক্ষ বা স্বর্গের জন্য লোভাতুর।
তোমার সাথেই একমাত্র আমার নিস্কাম প্রেম
জান সখী আমাদের জীবনে
তোমার এমনিতেই কোন অবদান নেই
অথচ তোমার নীরব নিশ্চিত উপস্থিতি
জীবনকে করে তোলে বাঙ্ময়।
একদিন তো সবকিছুই মুছে ফেলে
চলে যাব তোমার সাথেই
হবে মহাপ্রস্থান।
তোমাকে কখনও সখনও সেই প্রেয়সীর মত মনে হয়
যাকে কখনও ভালোবাসিনি
অথচ কী এক নিদারুণ অব্যক্ত প্রত্যয় বুকে নিয়ে
আমারই প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে
বছরের পর বছর ধরে
এক নিশ্চিত মিলনের প্রত্যাশায়।
বিজ্ঞান শিখিয়েছিল
মরণের পরে কিছুই অবশিষ্ট নেই।
এখন মনে হয়
থাকলে হয়ত ভাল হত।
তাহলে তোমার সাথে সেই জীবন উপভোগ করতাম অন্তহীন।