প্রখর দাবদাহ !
স্নান করছি ঘামে
লোকাল বাসে মানুষের ঠাসাঠাসি
দৌড় দিচ্ছে সবাই জীবনের টানে।
এই ভীষণ ভীড়ে একজন শুধু সুখী।
বেসরকারী বাসের কণ্ডাক্টর রতন।
মহানগরের বুকে রোজকার জীবন সংগ্রামের মুখ ।
চেঁচিয়ে ডাকে আরও প্যাসেঞ্জার,
"সীট খালি, সীট খালি"।
মাঝে মাঝেই বাসের ভেতরে তার কাকুতি মিনতি
"দাদা একটু পিছনের দিকে এগিয়ে চলুন "।
শুনেও শোনেনা অকথ্য গালিগালাজ
যাত্রী থেকে ট্রাফিক পুলিশের,
" শালা শুয়োরের বাচ্ছা,খানকীর ছেলে
শুধু শুধুই সিগন্যাল খাচ্ছিস"।
ঘরে তার বউ
ধনীদের বাড়ির বাসন মাজে
ছোট্ট মেয়েটা পড়ে সরকারী স্কুলে
তবে শুধুই শিক্ষার জন্য কতটা
সেটা ঠিক বলবার নয় ।
স্কুলে যাওয়া শুধুই
দুপুরের দুমুঠো খাবার জুটবে বলে
ছুটির দিনে সেটুকুও পাওয়া দায়।
দিন শেষে ঘরে ফেরে কণ্ডাক্টর
সারা শরীরে ব্যাথা বিষ।
ফেরার পথেই গলির শেষে
একটা ভাঙা গুমটিতে
'ঢালি'র বেআইনি দেশী মদের দোকান।
থানায় নিয়মিত মাসোহারা পাঠায় ঢালি
লোকাল চুনোপুঁটি নেতাদেরও খাতির করতে হয়।
চিনে বাদাম ভাজা, লংকা পোড়ার সাথেই
দু গ্লাস ঢেলে দেয় গলায় রতন।
ওর নিজের বাড়ি নেই।
সরকারী ড্রেনের পাশেই ঝুপড়ি ক'খানা,
গুঁড়ি মেরে ঢোকে তার একটাতে।
সরকারের প্রকল্প আছে
গরীবের জন্য নিজের বাড়ি
তবে জমিটুকু নিজের হওয়া চাই।
যার মাথা গোঁজার জমিটুকুও নেই
তার জন্য আর কেই বা মাথা ঘামায়।
লোকাল নেতাদের বদান্যতায় টিকে থাকে
খাস জমিতে গড়ে ওঠা ঝুপড়িগুলো।
ভোটের সময় কাজে লাগে
বোমা, বেআইনী বন্দুক জমা রাখতে।
এছাড়াও মিটিং মিছিলে ওরা ভীড় বাড়ায়।
বেঁচে থাকতে রতনদের
কেউ মানুষের হিসেবেই রাখে না
ভোটের সময় গুলি খেয়ে মরলে
মরা শরীরটা নিয়ে তখন শুরু হবে রাজনীতির খেলা।