খুঁজে বেড়াচ্ছি এক গোছা শিউলি
রচনা এবং আবৃত্তিতে :মানিক পাল
চারটি যুগ আগে আমাকে নিয়ে লিখা
কবিতার যে খাতাটি তুমি আমায় দিয়েছিলে,
তাতে কখনো উন্মাদনার অনিশ্চয়তার শেষ উপস্থিতি ছিলনা।
মোটা কাঁচের ওপারে ভালোবাসার
আদর্শিক ধূলিকণার অস্তিত্ব
যেন খুঁজে পাই আমি এখনো তোমায়।
খাতার পাতার শিউলি গাছটি যেন এখনো মূর্তমান,
যার কথা লিখে গেছ প্রায় প্রতিটি পাতায়।
তুমি জান?
তোমার শিউলি গাছটি
বিবর্ন পাতাগুলোও ধরে রাখতে পারেনা আজ আর।
হারিয়ে ফেলেছে তার শিউলি প্রসবের উর্বরতা।
আমি আর পাচ্ছিনা তাকাতে তার
প্রসব অক্ষমতার অন্ত যন্ত্রণার অবয়বে।
সঁপে দিয়েছিলাম শপথের কোলাহলে
গাছটি থেকে শিউলি কুড়িয়ে
দেব তোমার খোঁপায় গুঁজে।
রজনীর শব্দহীনতায় রাহুগ্রস্ত হয়ে রব
তোমার বহু বন্ধনে।
দেহের অন্তহীন আমন্ত্রণ বিথীতে
শিউলি ফুটিয়ে যাব সেই অনন্তকাল ধরে।
নগ্নতার দীপ্ত তনুর প্রতিচ্ছবি ভাসিয়ে দেব ইথারে ইথারে।
চুম্বনের দৃঢ়তায় কাঁপিয়ে দেব এই বিশ্ব ব্রম্মান্ড কে।
প্রেমের ইতিহাসে হারিয়ে দেব আমরা রোমিও জুলিয়েট কে ।
এডওয়ার্ডের মত ভালোবাসার দাম চুকাবো সব সম্পদ ছেড়ে।
দুর্ভাগ্য আমার, আগাম ঘন্টি না বাজিয়েই সময়ের রাক্ষসটা
চারটি যুগ নিল গিলে নিদ্বিধায় অনায়াসে।
রাক্ষসটির কাছে হেরে গেছে তোমার শিউলি গাছটিও
প্রসবের উর্বরতা হারিয়ে আসন্ন মৃত্যু যন্ত্রনায়
সে যেন কুঁকড়ে পড়ে আছে
রাস্তার ডাস্টবিনটির কোনায়।
বিশ্বাস কর, আমি এখনো খুঁজে বেড়াচ্ছি শুধু ছোট্ট এক আঁচল শিউলি।
বিধ্বংসী হিংস্রতার উষ্ণতায় প্রেমহীন চৌচির হয়ে যাওয়া পৃথিবীতে
আজ ও একটি শিউলি গাছ খুঁজে পেলামনা তোমার কবিতার সাদৃশ্যে।
তাই , ক্ষমা করো,
যদি তোমার খোঁপায় শিউলি গুঁজে না দিতে পারি
আর এই জনমে।