কবিতা লিখনে এবং আবৃত্তিতে : মানিক পাল
হে ঈশ্বর , কালের অনুদান বণ্টনে তুমি বড়ই কৃপণ !
সময়ের ঘোড়ায় বসিয়ে আমায়
চাবি ঘুরিয়ে ছেড়ে দিয়েছিলে এই পৃথিবী তে;
অবিনশ্বরতার প্রলোভন আমার বিশ্বাসের মহীরুহের
জন্ম দিয়েছিল তোমাতে ।।
কিন্তু আজ;
আমার জন্ম দিনে একটি মোমবাতি বাড়ার ছন্দে
গতি হ্রাসের অপ্রাসঙ্গিক একটি কমা ফেলে দেবে তুমি
- সে তো কখনও ভাবি নি আমি!
আমার ভালোলাগা গোলাপ বাগানে
নিঃসঙ্গতার এক বিশাল দানব দাঁড় করিয়ে দেবে তুমি
- সে তো কখনও ভাবি নি আমি !
এতখানি পথ পাড়ি দিয়ে এসে
অশান্তির সাগরে নিমজ্জিত জাহাজের
স্টিয়ারিং হুইলে দাঁড় করিয়ে দেবে আমায়
- সে তো আসে নি কখনো আমার কল্পনায় !
অশান্ত কৈশোরে দুর্নিবার দস্যিপনা
খুঁজে পেয়েছিলাম এক প্রচণ্ড গতির স্বত্বা;
দুরন্ত যৌবনের কনকর্ডে চড়ে
ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছিলাম মান্ধাতা বিধানের আলিঙ্গনতা ।।
কিন্তু আজ, বয়সের গাণিতিক সংখ্যা বৃদ্ধির উপহাসে
সত্যিই এখন আমি ক্লান্ত।
কবি গুরুর গানে ও যেন বিস্বাদ ঠেকায় আজ আমায়
রহস্যময় হাসির ঠিকানা খুঁজে পাই না আর প্যারিসের মোনালিসায়;
কর্ণ কর্ণকুহরে শব্দের দূষণ রবিশঙ্করের তানপুরার ঝংকারে
লিডোর নর্তকীরা মনে জাগায় না আজ পুলকের ডংকারে ।
নেশাগ্রস্তের ইচ্ছে ম্লান যেন আজ মোদীরা সিবাশরিগালে(Chivas Regal)
অর্ধাঙ্গিনী র লাল সিঁদুরে দেখি যেন আজ আতান্তর এক জীবনে।।
ঈশ্বর ! আমি জানি, কালের অনুদান দানে যক্ষরাজের মত কৃপণ তুমি,
তবুও জন্মদিনে তোমার টাইম মেশিনের ভেলাটি ধার চাইছি আমি।।
সময়ের ভেলায় চলে যেতে চাই দুরন্ত সেই যৌবনে
যেখানে ভালোবাসার রঙে আবার রাঙ্গাবো হারানো প্রেমিকা কে।
চলে যেতে চাই সেই দুর্নিবার দামাল কৈশোরে
যেখানে অপেক্ষায় আছে বন্ধুরা আমার ডাংগুলি খেলবে বলে ।
চলে যেতে চাই আমি শিশু বেলার সেই সময়ের চৌহদ্দির বলয়ে,
যেখানে ঘুম পাড়ানির গান শুনব আমি,
মাথা রেখে মায়ের কোলে।।