“ছোটবেলা:একাল সেকাল”
- মানিক পাল
তোমারা সবাই ভুলেই গেছ
আমাদের মত চলতে;
স্কুল শেষে বাড়ি না ফিরে
ছুটতাম মাঠে খেলতে।।
কাদা জল মেখে বাড়ি ফিরতাম
ভেজা বই কাঁধে রেখে;
বাড়ির কুকুর টি ঘেঁউঘেঁউ করত
অদ্ভুত ছেলে কে দেখে।।
লুডু কেরামে মন ছিল কম
মন ছিল ডাংগুলি তে;
স্নানে বাথরুমে চাইতুম না যেতে
ছুঁটে যেতুম পদ্ম দীঘি তে ।।
পিজ্জা ডাম্পলিং ছিলনা তখন
ছিলনা বার্গারের ধামাকা;
পাড়ার মোড়ে তে দেদার মিলত
ঝাল মুড়ি আর ফুচকা।।
বন্ধুদের সাথে সিনেমায় গেলে
যেতে হত চুরি করে :
মা যদি শুনত একটু কখনও
দিত পিট্টুনি ধরে।।
অংকের ক্লাসে মার খেতুম খুব
স্যার ছিল বড্ড রাগী;
বাড়ি এসে একটু নালিশ করলে
বাবা বলতেন , তুই নিশ্চয়ই গর্ধব পাজি।।
ইংরেজি র ক্লাসে ফাঁকি মারতাম
স্যারের ইয়ে মস্ত দাঁড়ি;
কঠিন কি সব গ্রামার ধরত
ইশ , না পারলে বেতের বাড়ি।।
ভূগোলের ক্লাসে মজা হত খুব
বিদেশের খবর জানতে ;
পান চিবিয়ে স্যারের প্রশ্ন
বলতো , লাসা ভারতের কোন প্রান্তে?
সংস্কৃত পন্ডিতের লম্বা টিকি
ক্লাসে এসে প্রায়ই ঘুমাত;
একটু আওয়াজে ই লাফিয়ে উঠত
নীলডাউন সবাইকে করাত।।
বঙ্কু জ্যেঠুর বাগানের গাছে
ভর্তি ডাঁসা পেয়ারায়;
চুপিসারে উঠে পাড়তে গিয়ে
হড়কে পুকুরের কিনারায়।।
মা শুনে এসে কান ধরে নিয়ে
বেঁধে রাখল কাচারি ঘরে;
কান্না শুনে দিদি, চুপিসারে এসে
খুলে বাঁধন অগোচরে।।
প্রাচুর্যের ছটা ছিলনা তখন
ছিল আনন্দ, ছিল হাসি;
আবদার ছিলনা বিশাল কিছুতেই
অল্পতে ই ছিলাম খুশি।।
মন বিকাশের পাঠ নিয়েছি
"বাল্য শিক্ষা" থেকে ;
শিষ্টাচারের অনুশীলন পেলুম
পারিবারিক আচার দেখে।।
তোমরা এখন ভুলেই গেছ
খেলতে মাঠে গিয়ে;
হারিয়ে ফেলছ শরীর-স্বাস্থ্য-মন
স্মার্ট ফোন বুকে নিয়ে।।
********