তোমাকে পড়তে দিলেম, একটি প্রেমের কবিতা
অথচ তুমি শিহরিত হতে হতে বলছো—
এখানে এতো যুদ্ধ কেন!
আমি বললাম
যুদ্ধ কোথায় দেখলে, মেঘনা!
এ-তো বসন্ত
ওই যে দেখো,
মুখরিত সকালের ঠোঁট ছুঁয়ে আছে নীল প্রজাপতি
প্রতিটি শব্দের আড়ালে—
সাইবেরিয়ান অতিথি পাখিদের ডানার উড়ান
নর্দার্ন গ্যানেটের চোখে এক মহাদেশ গল্প
বার্ডস অফ প্যারাডাইজের মায়াবী নীল চোখ
প্রতিটি পংক্তির বহতায় দেখো—
বাদাবনে দশমীর গোণমুখ, উপচানো জোয়ার
রাতজাগা প্রেমিকের চোখের ঘুমঘুম হাতছানি
কোকিলের কুহু
আর ভ্রমরের গুঞ্জন।
তুমি বললে,
না না! এখানে অনেক কোলাহল!
অনেক বুক ধড়ফড়!
আচানক আচানক অনেক হুমড়ি!
আমি বললাম—
কী সব বলো তুমি মেঘনা!
অমন ডাগর রক্ত কাঞ্চন বিলাস
ফ্লোরার মতোন অমন বিবাগী বাতাস
অমন নিতুয়া বুকে গরানের আবাস
জাদু মোহনায় হেঁতালের দোলা
হরিণীর চোখে ভাসা সবুজ কেওড়া
খইয়া বাবলার বেহেশতী স্বাদের নেশালু আবেশ
আর গেরুয়া স্যাফরনের সুবাস
কী মোহন এই পঙক্তির আড়ালে, দেখো!
দেখো পড়ে!
তুমি বললে—
আমি চিনি দোপাটি ফুল
গাঢ় বেগুনী প্রিমরোজ, ম্যুসেন্ডাও চিনি
চিনি শেয়ালকাঁটা এমনকি ডারউইন স্লিপারের জৌলুস
নয়নতারার মতো গোলাপি আভাও নয়
এ-তো রক্ত মউল! সূর্যশিশির!
এ-তো এশিয়ান ব্লিডিং হার্টের ঝুলন্ত বিষের থলি!
এ-তো অপূর্ব নীল পপি বাগানের ঘুম বাতাস, আর
র্যাফ্লেশিয়া আরনল্ডির বৃহৎ হা!
নাহ! এখানে অনেক কুহক! অলীক মায়া!
তোমাকে পড়তে দিলাম— একটি প্রেমের কবিতা
অথচ তুমি বলছো—
এখানে এতো সম্মাোহনী মন্ত্র কেন!
এখানে ব্ল্যাকহোলের মতো, এতো এতো গ্রাভিটি কেন!
২১ জানুয়ারি ২০২৩