আমি দেখেছি পৃথিবীর
আমি দেখেছি পৃথিবীর ।
কত দেশ মহাদেশ সাগর মহাসাগর,
কত দুর্গম প্রণালী।
মরুভূমি পাহাড়-পর্বত নদ-নদী।
ইন্দ্র নীলা পোখরাজ হীরা পান্না রত্ন খনি।
আমার নবীর দেশ আরবে এসে,
দু'নয়ন গেছে অশ্রুতে ভেসে।
ইসলাম প্রচারের তরে,
আমার নবীর শরীর থেকে রক্ত ঝরে।
হাজার হাজার সাহাবীরা ঘুমিয়ে আছেন,
ইসলামের জন্য হোয়েছেন শহীদ।
আবু বকর, উমর, আলী, ওসমান, হানজালা।
মরুর পরে ঘোড়ায় ছুটে চলে আরব বেদুইন,
হাজার লাখ নবী-রসূল আর-
সুলাইমান জুলকারনাইন।
ভয়ার্ত অচল পৃথিবী দেখলাম,
সুখ-শান্তির দিন চিরদিন যেন হারালাম!
সারা পৃথিবী করোনার প্রকোপে প্রকম্পিত,
মৃত্যুভয়ে প্রতিটা মানুষ শঙ্কিত।
এখনো আক্রান্ত করোনায় কোন কোন দেশ,
থামেনি এখনো মৃত্যুর মিছিলের রেশ।
কত যুদ্ধ কত রক্ত ক্ষয় কত মৃত্যুর মিছিল,
দেখেছি আমি কেঁদেছে শুধু সর্বসহা নিখিল।
আমি দেখেছি সাহারার তপ্ত উষ্ণ মর্মর কঠোরতা,
আর সাইবেরিয়ার বরফের হিম শিতল শীতলতা।
আমি পৃথিবীর মানব হয়ে করছি ভ্রমণ,
কখনো ভেঙে পড়িনি সংকুচিত হয়নি মন।
পৃথিবী থেকে চন্দ্রে চন্দ্র থেকে মঙ্গলে,
বারংবার করেছি পদার্পণ।
বাহবা দিয়ে ধন্য করেছে মানবজাতি সকলে,
তোমাদেরই তরে সমর্পিত আমার জীবন।
আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত দিয়েছি পাড়ি,
কেপটাউন থেকে হনুলুলুর পথে আড়াআড়ি।
মিশিকান অন্টারিও সুপিরিয়র হ্রদ থেকে এসে,
ফিরে এসেছি কানাডার নায়াগ্রা জলপ্রপাতে।
দেখেছি আরো জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি,
ইতালির ভিসুভিয়াস।
দেখেছি চিন দেশের লূ রাজ্যের ছূফু গ্রাম,
যেখানে জন্মেছিলেন কণফুসিয়াস।
আফ্রিকার নীল ফোরাত নদী দেখে,
এসেছি আরব সাগর।
এ সাগর পাড়ি দিয়ে জাহাজ ,
ভাসিয়েছি লোহিত সাগর।
কাশ্মীরের ভূস্বর্গ দেখেছি,
আরো উঠেছি হিমামালয় পর্বত।
নিউজিল্যান্ডের সবুজ প্রকৃতির মাঝে এসে,
খেয়েছি গাভীর দুধের শরবত।
অস্ট্রেলিয়ায় ধরিতে গিয়েছি সুদৃশ্য রঙিন মাছ,
প্রবাল দ্বীপ গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ মেরিনার পার্ক।
আক্রমণ করতে ছুটে এসেছে হিংস্র শার্ক।
ধন্য জীবন আমার আরোহন করে,
পর্বত জাবালে তূর।
দেখেছিল যেথা মুসা নবী আল্লাহর নূর।
হেরা ওহুদের পরশ মেখে দেখেছি মক্কা মদিনা,
মূর্তিতে ভরা কাবা শরীফ আজ ,
জান্নাতের বালাখানা।
আফ্রিকায় কঙ্গোর গভীর অরণ্য যেয়ে,
ভয়ে শরীর করেছিল ছমছম।
পিপাশার্ত কন্ঠ ভেজাতে ,
ছুটে এলাম মক্কার জমজম।
খুদায় আহার করেছি আরবের উট দুম্বা খুরমা,
আঁখিতে দিয়েছি আল্লাহর নূরে প্রজ্বলিত,
তূর পর্বতের সুরমা।
মিশরের পিরামিড ঘুরে এলাম চীনের প্রাচীর,
ক্লান্ত অবসন্ন প্রান জুড়ালো এসে,
সালোমন দ্বীপে প্রশান্তর তীর।
শত শত ঝর্ণাধারায় স্নান করেছি,
শুষ্ক রুক্ষ শরীরে মধুর পরশ পেয়েছি।
দেখেছি পেখম মেলা ময়ূরীর নাচ,
ওই পুবের আকাশে সাতরঙা রংধনুর সাজ।
ক্ষনিকের এই রংধনু গেছে ঢেকে,
মেঘ তারে করেছে গ্রাস এঁকে আর বেঁকে।
বিলাসী ঐশ্বর্যের প্রতীক,
রত্ন পাথর নীলা পান্না হীরা পোখরাজ।
এর সন্ধানে ঘূরেছি কত,
আরজিনা থেকে কারোলিনা-
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আরাকানসাস
কুইন্সল্যান্ড থেকে তাসমানিয়া
ক্যালিফোর্নিয়া- থেকে ওসান ভিউ-
শ্রীলংকা থেকে পাকিস্তান
ইথিওপিয়া থেকে কঙ্গো-
আফগান থেকে কাশ্মীর
আরো যে কত দেশের খনি কতশত।
পাওয়ার থেকে হারিয়েছে বেশি।
কত ধর্ম-বর্ণ সাদাকালো ,
মানুষের সাথে শুধু রেষারেষি।
বারংবার জীবনের ওপর আঘাত পেয়েছি,
বাংলার মানুষ তাই নিরবে সবি সয়েছি।
দেখেছি আগ্রার তাজমহল প্রেমের সমাধি।
এই বিপরীতে আছে,
নর্থ ক্যারোলিনার ব্রুসলি মাউনটেনের,
ক্রন্দিত বন্দি লাখো আসামি।
তাসমানিয়ার মধু,
অস্ট্রেলিয়ার আঙুর পান করে,
সাগরে জাহাজ ভাসিয়েছি,
দক্ষিণ মেরু দেখিবারে।
সাগর বক্ষে বুকটা করে দুরু দুরু,
গর্জন করিতে সাগর গূরু গূরু।
বহুদিন পর এসেছি এন্টার্কটিকার পরে,
আশ্রয় পেলাম এন্টার্কটিক গবেষণার ঘরে।
বরফের রাজ্য বাসি সিন্ধুঘোটক,
ডলফিন শীল পেঙ্গুইন পাখি এলবাডর্স।
অ্যান্টার্কটিকার অপরূপ রুপে হয়েছি হতবাক।
ঘুরে ফিরে এসেছি দক্ষিণ আমেরিকার পেরু।
বরফের রাজ্য উত্তর মেরু।
বারংবার আবিষ্কারের নেশায় মেতেছি,
পরাজিত হয়ে ফিরে এসেছি।
উত্তর মেরুর ওপারেতে,
কি আছে এ কারো জানা নেই।
এখানে দিনরাত সবই সমান কোন তফাৎ নেই।
অন্ধকারাচ্ছন্ন ধুশর বিম্বিসার,
জগৎ আখরী সীমানা?
কোহে কাহাফ আবেহায়াতের কুপ,
যার দেখা মেলে না!
জাপানের পরে প্রশান্ত তার ওপারে তূর সাগর,
এখানেই জুলকারনাইনের সিসার প্রাচীর।
ইয়াজুজ মাজুজ এর আসর!
শত শত দেশের হাজারো কোটি,
মানুষের এই পৃথিবীতে।
আসে নাকো কভু ভিনগ্রহের,
অধিবাসীরা দেখা দিতে।
এলের্ন আমি যার কথা শুনেছি সে নয় বাস্তবে,
সে আছে শুধু মানুষের,
কুসংস্কারাচ্ছন্ন কল্পনার জগতে।
পৃথিবীতে লাখো-কোটি জিন,
বসবাস করে শরীর বিহিন,
আল কুরআন তার প্রমান
যে মানেনা সে বেদ্বীন।
বাংলার জমিনে এসে যা দেখলাম,
সীমাহীন দুঃখে শুধু কাদলাম।
এই দরিদ্র জনবহুল দেশ টারে,
প্রকৃতি বারে বারে ধ্বংসের,
হিংস্র ছোবল মারে।
কখনো সুনামি হেরিক্যান,
টর্পেডো আম্ফান জলোচ্ছ্বাস ।
বাংলার মানুষের সাথে,
চিরকাল করেছে পরিহাস।
বন্যায় ভেসে গেছে অর্ধেক দেশ,
সীমাহীন দুঃখ কষ্টের নেই কোন শেষ।
এই দুঃখের দিন শেষ হবে কবে,
কত কাল তারা অনাহারে দুঃখে-কষ্টে রবে।
আল্লাহর ওয়াস্তে দানের হাত মেলে ধরো,
বন্যা পীড়িতদের সাহায্যার্থে ত্যাগ স্বীকার করো।
সারা পৃথিবী থেকে যারে বেশি ভালোবাসি,
সে আমার সবুজ শ্যামলে ভরা বাংলাদেশ,
আমার প্রিয় জন্মভূমি।।
আসমান জমিনের মাঝে আমি যা দেখেছি,
স্রষ্টার সৃষ্টির মহানিদর্শন সবি ভালোবেসেছি।
আকাশ চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা,
অরণ্য ফুল ফল পশুপাখি ,
কীটপতঙ্গে গড়া বসুন্ধরা।
পৃথিবী নিয়ে কবিতা লিখলে হয়ে যাবে মহাকাব্য
এ কাব্য পড়বে না কেউ নেই কারও ধৈর্য।
মানবতা প্রেমের ভিক্ষা করেছি বিশ্বের দ্বারে দ্বারে,
যুদ্ধ নয় শান্তি চাই বেঁচে থাকে যেন সবে,
বাঁচার অধিকারে।।
মামুন ইকবাল