ভাত দিতে পারিনি মাকে

বহুকাল ধরেই বিষন্নতা গ্রাস করে আছে
একথা কাউকে বলিনি আমি
অন্ত:স্থলে আজও
একটা নি:সীমতা কুড়ে কুড়ে
নি:শেষ করে দেয়
অর্ধ হৃদয় নিয়ে ঘোরের মধ্যে
বাজার দোকান যাই
সুগন্ধি ধূপ কিনি আজও
আমার মা, যার ছবির তিনভাগ গেছে
আবছা হয়ে,
বহু চেষ্টা করেও ছবিটাকে
জলজ্যন্ত করতে পারি নি কোনদিন
একান্তে পরে আছে
অব্যবহৃত দেরাজের পাশে |

ভারতবর্ষের দু:খী মেয়েদের মত তারও
মুখে হাসি ছিল না কোনদিন
অথচ পথে ঘাটে এমন কি
আমাদের সন্ধ্যা দিদির একগাল
হাসির মত তকতকে
হয়ে উঠত প্রাত্যহিক ঘর দোর
বেঞ্চে বসে
ম্যামদের হাসিমাখা মুখগুলো
কেমন ঝলসে উঠতে দেখতাম
আমার মাও আমাকে অঙ্ক শেখাতেন
ইংরেজি পড়াতেন,চেক করতেন স্কুল টাস্ক
সেকালে ট্রেনে চড়িয়ে
নিয়ে যেতেন নিউ মার্কেট শপিংয়ে |

অথচ মায়ের কোন কিছুতেই
খুশি হতেন না বাবা
আলতা সিঁদুরে স্বর্গের দেবীর
মত দেখাত মাকে
রোজ সাজিয়ে দিতাম আমি
যেদিন মায়ের মুখের উপর
ছুড়ে ফেললেন ভাতের থালাটা
দূরে দাঁড়িয়ে
ফুঁসছিলাম আমি - বাবারা অনেক বড়
ভয়ে সেঁধিয়ে ছিলাম খাটের তলায়
শুধু সান্ধ্য প্রণামে
তুলসী গাছকে বলেছিলাম
আমাকে অনেক বড় করে দাও ঠাকুর |

হঠাৎই অসুখে পরলেন
জানতে পেলাম সেরিব্রাল হয়েছে মায়ের
শত চেষ্টা করেও
সেদিন অসুখটির অর্থ বুঝি নি
অনেকের ভীড়ে ছোট্ট
আমাকে পাশ কাটিয়ে
হু হু ছুটে গেল এম্বুলেন্স -

সন্ধ্যা দিদি আর আমার একরাশ
কৌতূহল থমকে গেল সহসা
প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরে
ক্লান্ত মা বলতেন ' ভাত দে
সন্ধ্যা দিদিকে দেখিয়ে আমি তখন
খেলার সাম্রাজ্যে
কোনদিনই ভাত বেড়ে দেই নি
উদভ্রান্ত মা'কে,

কি বুঝি তখন -
শান্তির বাড়া ভাতে কত রোগ সেরে যায় মায়েদের