[১]

রেডিও কলোনীর রাস্তা হতে সবগুলো অসুখ চুরি করে পালিয়েছে - বৃদ্ধ বাশিওয়ালা।
অনেক পাতার শব্দ শেষে -
জানালাটা কার তৃতীয় চোখ হয়ে এলো?
কে দিল জানালায় বন্দুক চোখ?
সুবর্ণ হাসির তীর হয়ে কে দিল উড়াল কলোনীর আকাশে!
বাশিওয়ালা, তুমি চোর হিসেবে পারফেক্ট নও - নও মৃত রাতে সুর তোলা অক্ষত অক্ষর!

২.১০.১৭
বৌলপুর।

                      [২]

সে তুমি যাই বলো না কেন-
বলতেই থাকো এলাচগুড়োর গন্ধ মেখে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার গল্প
হুসামের ন্যায় দৃশ্যগুলি কিন্তু পায়ের বুড়ো আঙুল থেকে ধীরে ধীরে বেয়ে ওঠে নাভির দিকে - রেডিও কলোনীতে তখন মৃত্যু অপেক্ষায় কাটে শিরশিরানি রাত।
পাইন গাছের মতই দীর্ঘ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সময়ফুলের ভাজে - প্রাচীন ধুপের গন্ধ।
সে তুমি যাই বলো না কেন -
বলতেই থাকো নলথুরি, জয়ন্তি খুঁজে আনার সকাল - বিকেল।
তবুও রেডিও কলোনীর পায়ে হাটা পথ আর জিরানীর হাইওয়ে সবে'তে ধুলোবালি মেখে সন্ধ্যের মুখে এসে দাড়ালে - মানুষের সাথে দেখা হয় রঙের ঘরে, বোধহয় এরাই খেয়ালি বজ্রবিদ্যুৎ সময়ের রথচক্রে!

৩.১০.১৭
বৌলপুর।

                       [৩]

আরো একবার দেখা গেলো তারে - কথা বলিতেছে হেসে হেসে রেডিও কলোনীর মাঠে। ঘিরিয়া ধরিছে তারে সকলের চোখ আর শিশুদের ভারী চিৎকার। মাটি হতে ঠেলিয়া উঠিছে নিভৃত পরানে চরম তুফান। মাঠের হাওয়ায় উঠিছে হা হা রব - যেন একঘরে এক হাহাকার করিতেছে সুর। দূরে দাঁড়ায়ে আমি দেখিতেছি তারে - পুড়েতেছি কলোনীর তামাশায়। তবু, সে চমৎকার সরল সত্যের মুখ - দেখিলোনা আমারে হায়!
আরো একবার শোনা গেল তারে - বহিতেছে সুর হয়ে ভেসে ভেসে কলোনীর আকাশে। রুক্ষ হৃদয়ের চাপে টলমলে সময় যেন বিলুপ্তির পথে । আর গভীর কথার তলে পেতে রাখা বিরাগগাথা সব আজ মখমলের মতন মোলায়েম ব্যাথা করে যায় বপন - কলিজার কোমল জুড়ে। দূরে দাঁড়িয়ে আমি শুনিতেছে তারে - আলোর গন্ধ আধারে রোদের জোয়ার হয়ে যায় । তবু, সে বেগবতী নদী শুনিলোনা আমারে হায়!
দূরাগত নিষ্ঠুর সুর আর ভেঙে ভেঙে যাওয়া ঢেউ কি বলিতে আসিয়াছো হেথায়?
এসকল তো আমি স্বয়ং জানি -
আরো বহুবার তারে শোনা যাবে, বহুবার যাবে দেখা - অবিরাম গতির শিখরে। আর কেবলই নির্জনতার স্বরে ফেনাইয়া উঠিবে জলের কলকল - সে কেন শুনিলোনা আমায়, কেন সে দেখিলোনা হায় !

২০.১০.২০১৭
বৌলপুর।


                     [৪]

আজ হাওয়া ছাপিয়ে সুর হয়ে আসে তরল সময়।
শীতল পাটি বিছিয়ে দেবার মতন করে নিজেকে বিছিয়ে দিলাম রেডিও কলোনী জুড়ে -
এবার তুমি প্রবেশ করো আমার গভীরে - কৌতুকি বিস্ময় নিয়ে।
অনুবাদ করো আমাকে -
ধোয়াহীন
আর
বাহান্ন তাসের ভাষায়।
মাংসের ফুল
আর
ম্যাজিশিয়ানের ভাষায়।
অনুবাদ করো আমাকে -
আমাদের সঙ্গম জুড়ে সুর করে যে জোকার - তার আলপিনের মতন ভাষায়!

২৬. ১০.১৭
বৌলপুর।

                     [৫]

একটা হাহাকার মেলিয়া ধরেছি নিপুন তল্লাসী জুড়ে -
কলোনীর চোখ যতদুর যায় দেখিনা আর তারে !

২৮.১০.১৭
বৌলপুর।

                       [৬]

একান্ত দুঃখিত লোকের মতন শুয়ে আছি।
কবরের গভীরে।
মাটির গভীরে প্রচন্ড ক্ষমতায় ডুবিয়ে দিয়েছি শিকড়।
আগামী শীতে,
আমার চোখদুটো ফুল হয়ে ফুটে আসবে - কলোনীর সব বাগানে।
আমার ছোট বোনের বান্ধবী,
আমি আবার দেখতে পাবো তোমাকে - বিগত দিনের চেয়েও দারুন উজ্জ্বল !

২৯.১০.১৭
বৌলপুর।

                       [৭]

আমাদের অতীত শুষে নিয়ে
এখন
একা-একা দুলছে যে দোলনা
রেডিও কলোনী ঘুমিয়ে গেলে -
তার সাথে কথা বলি -
দীর্ঘশ্বাসের ভাষায়।

১-১২-১৭
বৌলপুর।