বাবা,
তোমাদের কীর্তি নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে
আর কথা বলবো না,
লিখবো না আর কোন কবিতা।
ওরা তো মুছে দিয়েছে সব স্মৃতি,
ভেঙে দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সৈনিক-স্তম্ভ
বঙ্গবন্ধুর একটি চিহ্নও রাখেনি অবশিষ্ট।
তাঁর ছবিকে করেছে অপমান,
হাতুড়ী-শাবলে পারেনি গুঁড়াতে তাঁকে
তাই এনেছিল বুলডোজার।
তোমাদের করেছে ওরা সকরুণ অপমান
অস্বীকার করেছে ওরা তোমাদের!
তোমাদের সেই বাংলাদেশ এখন আর নেই
আকাশে উড়ছে অগণিত শকুন
নির্ভয় উল্লাসে নেমে গেছে
তোমাদের রক্তে কেনা স্বাধীন ভিটায়!
ওরা লুটে নিয়েছে সব
ফ্রিজের খাবার থেকে শুরু করে,
হাঁস-মুরগি-চেয়ার-টেবিলও বাদ রাখেনি।
নারীর অন্তর্বাস লুটে করেছে উল্লাস
লজ্জাহীন অসভ্য অমানুষের দল!
আজ আমি বাকরুদ্ধ নিদারুণ হতাশায়;
তোমার সোনার বাংলায়
হয়তো আর গাওয়া হবে না
“আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি।“
পতাকার রঙও হয়তো বদলে যাবে
হয়তো যুক্ত হবে চাঁদ-তারা বা অন্যকিছু!
আমার দেখা চেনা মানুষগুলোকে
আজ খুব অচেনা মনে হয়,
নিজের শহর-রাস্তা-ঘাট আর চিনি না,
সব কিছু কেমন যেন অচেনা-অপরিচিত,
কেমন যেন থমথমে-ভুতুড়ে-নিষ্প্রাণ
হঠাৎ হঠাৎ শোনা যায় চিৎকার আহাজারি
দাউদাউ জ্বলছে রাস্ট্রীয় সম্পদ
টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া...
আমার এ বুকে আজীবন রয়ে যাবে
শুধু স্মৃতিটুকু তোমাদের,
সেই মমতাময়ী প্রিয় বাংলার।