একজন কবি নিতান্তই কবিতার ছলে
বিধাতার কাছে জানতে চেয়েছিলেন ইবাদতের কৌশলে
এক পবিত্র রাতে-‘ (পীঠস্থান) কি ডাকাতদের গ্রাম’
আসলে কি তাই, কিছু ভুল বলেছেন, নাকি অবিরাম
অভিমান তার। বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় আমার, খুউব কষ্ট হয়
ভাবতেতো নিদারুণ ভয়
এ কোন ডাকাতদের গ্রামেভরা দেশে আছি!
কী দেখে, কী শুনে সন্ন্যাসী দিনে-রাতে বাঁচি
আমরা সকলে! এখানে হাওয়া নেই, গন্ধ নেই, সুর নেই, ছন্দ নেই
এখানে কেবলই মাতাল ভাবনারা নাচে ধেই ধেই
উড়ন্ত মদের গন্ধের তালে
কী দেখতে হবে আর কালে-কালে!
কে জানে। এখানে বীরত্বের সেঞ্চুরি উদযাপিত হয়
কী বিভৎস্য পৌরুষ কান্ডের দীপালিময়
কোন বিগলিত বিকৃত সন্ধ্যায়
চারিদিকে কেবলই অসহায়,
বিপন্ন বাতাস কাঁদে রাস্তায়, অলিতে-গলিতে
বন্যেরা দিব্যি কেড়ে নিয়ে যায় চলিতে চলিতে
সভ্যতার উত্তুরীয় হায়!
আবরুহীন হয়ে ঐ দেখ পালায়, পালায়,
সভ্যতা কেমন করে! এখানে নাকি টাকা ওড়ে আকাশে বাতাসে
বকুলের গন্ধের ন্যায়, তাই মৌমাছি গতিতে লুটেরারা ছুটে আসে
উর্ধশ্বাসে; লুট করে, লুট করে দুহাত ভরে
আবার লুটের টাকা ভাগ করে উৎসব করে ঘরে-ঘরে
কী আজব ডাকাতদের গ্রাম! এখানে ভয়ে কেউ কাঁদে না
এখানে জ্ঞান আর গরিমা কখনো গাঁটছড়া বাঁধে না-
একথা সত্য। জ্ঞান এখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে কসবী রূপের বাথানে
আর রূপকুমারদের এক সয়ম্বর অনুষ্ঠানে
রূপ যে নিলামে ওঠে। হায় ডাকাতদের গ্রাম! কী দশা! কী দশা! তোমার
পৃথিবীতে একেবারে জুড়ি মেলা ভার
এমনকি হাজারটির ভেতর
অথচ একদিন এ জমিন ছিল সোনাময় বরণ্যের আকর
আকাশ-বাতাস মুখরিত করে ছিল প্রমুখ বরণীয় গণ্যরা
তবে আজ কেন চারিধারে হাজারে হাজারে একচোখা বন্যরা!
কেবলই মুখর। আজ আর গর্ব করার কিছুই নেই, আছে শুধু হতাশার কুয়াসার নিবীড় এক জাল
আমাদের চারিদিকে। আছে হৃদয়ভরা কান্নার জল; সাগরের মতো বিশাল
আছে বুকের ভেতরে গুমরে মরা বেদনা; ডরো ডরো, মরো মরো
হে বাঙালি, তুমি এইগুলি নিয়ে গর্ব করো, গর্ব করো।