একজন বলিষ্ঠ-রব কবি বলেছেন আকাশ বাণীর মতো -
দেশ চালাতে গাদা-গাদা সচিব লাগে, লাগে যত
মহাপরিচালক, লাগে আবার  
৪৬০ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার
এমনকি দেশ চালাতে পতিতালয়ও লাগে, লাগে সবই
দেশের শুধু প্রয়োজন নেই একজন কবি
তাইতো কবি প্রকৃতির বিপরীতে যেয়ে শেষ পর্যন্ত
একটি জিজ্ঞাসার জন্ম দেয়ার মতো
মরেই প্রমাণ করলেন, সত্যিই
দেশের প্রয়োজন নেই কোন কবি

সেই অপ্রয়োজনীয় কবি আরো কিছু প্রয়োজনীয় কথা বিশেষ করে
বলতে চেয়েছিলেন তার প্রথম মৃত্যুর পরে!
সে কথা আর বলা হয়নি 
আর কোনদিনও বলা হবে না জানি
না-বলা কোন কবিতার মতন 
তাইতো অপ্রয়োজনীয় কবির সেই দ্বিতীয় মরণ
ঠিক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো ব্যর্থ হয়ে গেল নিমিষে

তিনি আজ বেঁচে থাকলে হয়ত বড় দুঃসাহস ভরে বলতেন-এ এদেশে  
আজ নিতান্তই ব্যর্থ কবিরা
আর ততোধিক ব্যর্থ তাদের কবিতারা;
বড়ই অপ্রয়োজনীয়, ফালতু একেবারে!
-এ যেন আজ ছদ্মবেশি প্রকৃতির বিচারে
হয়ত আরো বলতেন-জানি এদেশে আর আবাদ হবে না ঘরে-ঘরে
উফশী কবিতা, হবে না কবিতার বিপ্লব ডিসকো ডান্সের মতো করে
জমজমাট। কেননা, উফশী কবিতায় কোন ঈশ্বর-গন্ধ থাকে না কখনো

মনে হয় তাই যেন 
ছদ্মবেশি বৃষ্টিরা বড়বেশি সতর্ক আজ দলে-দলে
অকাট্য ছলে-বলে-কৌশলে
তারা আজ আরও বেশি গতিশীল; বর্শা-হস্ত, যুথচারি
অন্ধকার-দশার গভীরে হায়েনার মতন শিকারি 
সুতরাং কবিরা সাবধান!
পালাবারও থাকবে না কোথাও কোন স্থান
সুদূর মেক্সিকোতে, এমনকি ইথারে

কবিতার বলিষ্ঠ অথবা রঙধনু-কালচারে
এদেশের মাটি আর সমৃদ্ধ হবে না ছন্দ-উপমার চাষবাসে
ভরবে না আকাশ-বাতাস কাব্যিক সুবাসে
-এ যেন আজ ছদ্মবেশি হাওয়ার সিদ্ধান্ত;
বড়বেশি দৃঢ় অপরিবর্তনীয়, তাইতো
স্থির লক্ষ্যে পৌঁছাবার
আজব কবিতা-কৌশল তার; ছন্দে-ছন্দে ট্রমা-কালচার
বড়বেশি রহস্যময়, পয়ারবিহীন এলোমেলো বলা
কিছুটা বাউরি বাতাসের মতন যেন মাতাল চলা

এ কোন পথে আজ, এ কোন স্বদেশ!
এ কোন কৌশল! চারিদিকে কোন রহস্যবেশ!
এক অনিশ্চিত ভবিতব্যের দিক বরাবরে
কেবলই এক অসুস্থ অস্থির সময়ের ভেতরে
সকলে যেন আজ একেবারেই বিলীন;
শিরোনামহীন, কেবলই শিরোনামহীন 
                        ………
(ডিসেম্বর ২০০৪, সদরপুর, ফরিদপুর।)