যখন নব্য বুদ্ধিজীবী বলেন- ‘যখন দেখি- Those, who are mediocre, are leading the society, তখন খু-উ-ব কষ্ট পাই । আমি তখন গভীর দুঃখে ভাবি তাই-এটা দেখার জন্যই কি দেশ ভেসেছিলো রক্তের বন্যায়?’ জ্বলেছিলো মহাখান্ডব-দাহনে হায়!’ যখন দেখি বন্যেরা নেই আর বনে, গণ্যেরা ভূপাতিত, যোগ্যেরা রীতিমতো যোগাসনে, ভোগীরা পূর্ণিমার মতো প্রসন্নমুখে অশ্বমেধ যজ্ঞ  করে পিউ-রাণীর আস্তানায় হৈহুল্লোড় সুখে, তখন বোঝা যায় দিব্য জ্ঞানে-কোথাও কেউ নেই, কিছু নেই কোনখানে।

কবি একদিন বলেছিলেন-‘পিউ কাহা পাপিয়া’; সমাজের পাপিয়াতো আজ নিজেই পিউ নিজেই পাপিয়া; মক্ষ্মীরাণী বলা যায় যাকে। মক্ষ্মীরাণী হয়ে কেমন ধরে রেখেছে গোটা সমাজটাকে! সকলেই যেন আগুন-মুখ পতঙ্গের ন্যায়। সকলেই পতন চায়, পতন চায়। কেবলই মৃত্যুর দিকে ধেয়ে যায়। কী দুর্ভাগা সমাজ, কে জানে! কোথাও কেউ নেই, কিছু নেই কোনখানে।

যখন দেখি ন্যায়পতি বসে উচ্চাসনে চক্ষু মুদে অট্টহাসি হাসে আনমনে, কথার ছলে তামাশার তীর ছুড়ে মারে। পাদপীটে বসে তার কতিপয় উমেদার তাবেদার ভাগ্য বিধান করে, তখন নিতান্তই ভাগ্যহারা শিকারের কী-ই বা করার আছে, অবাক বিস্ময়ে চেয়ে থাকা ছাড়া? হয়ত বা বলার আছে বেশ–সত্যিই সেলুকাস, কী বিস্ময়কর এই দেশ! গড়েছে কোন ভগবানে! কোথাও কেউ নেই, কিছু নেই কোনখানে।

আমার প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশ বলেছিলেন –“পৃথিবীতে অদ্ভূত এক আঁধার এসেছে আজ, যারা অন্ধ তারাই চোখে দেখে বেশি”। আমরা কি তাহলে আছি সেই দুর্লভ অন্ধকারে? কেবলই খুঁজে ফিরি, হারিয়েছি যারে? জানি রাজ্য আছে, প্রজা নেই; রাজা আছে, নীতি নেই। তাই রাজনীতি আজ কেবলই এক দুর্বোধ্য কবিতা; কেবলই এক বিস্ময়কর কবিতা-কবিতা খেলা সারাবেলা। হা! সমাজ, হা! মানুষ, হা! রাজনীতির কবিতা-কবিতা খেলা। সকলেরে এ কোন মরণখেলায় টানে! কোথাও কেউ নেই, কিছু নেই কোনখানে।