আমার মাথার উপরে এক আগুনের পাখি;
বড্ড অস্থির, তাই ভয়ে ভয়ে, বলা যায় একেবারে আড়ষ্ট থাকি
সারাক্ষণ। আমি কিছুই বলি না; সে আমাকে বলায়
আমি কোথাও চলি না; সে-ই আমাকে চলায়
এপথে-সেপথে। ভুল করে কিছু ভাবলে
হঠাৎ করে মাথায় কোন চিন্তা আসলে
সে অকস্মাৎ মাথার তালুতে নখর টোকায়
আর চিন্তার পথ ঘুরিয়ে দিতে বাঁকা ঠোঁটে হুইসেল ফুঁকায়
অবিরাম। আমি তখন দিশেহারা হয়ে যাই
একেবারে; অকস্মাৎ সম্বিত হারাই
আমি কোন সময় মুখে হাসি না
কোন দৃশ্যমান হাসি। কখনো চোখের জলে ভাসি না
শুধু অন্তরে কাঁদি। কখনো কোন ভুলে
এতটুকু এলোমেলো হলে
সে সহসা নির্দয়ভাবে কেয়ামত ঘটায়;
হঠাৎ করে সুনামির গতিতে পাখা ঝাপটায়
বিরামহীনভাবে। অনর্গল আগুনের শ্বাস ফেলে
সকালে দুপুরে বিকালে
আমি বেসামাল হয়ে পড়ি
জ্বলে যাই, পুড়ে যাই, যন্ত্রণায় চিৎকার করি
কিন্তু কেউ আসে না মমতার হাত বুলিয়ে দিতে
নিদেনপক্ষে নিছক শান্তনা দিয়ে কাছে টেনে নিতে
কেউ আসে না। কার কাছে সাহায্য চাবো, কার কাছে বিচার
চারিদিকে বিরান ভূমি, মাঝেমাঝে শকুনের দল, কেউ নেই আমার
তবে কি সকলেই আমার দশায়;
আমার মতো আগুন-বন্দী, আমার মতো অসহায়?
কেন? কেন আজ আমরা সমস্বরে নাই, কেন সকলে মুখ লুকিয়ে থাকি
তবে কি সকলের মাথার উপরে আমার মতো আগুনের পাখি?
                         (রচনাকাল-জানুয়ারি ২০২৩)