কবি ও কবিতা বড্ড যুগল-বন্দী এক সত্তা
তারা কেউ কারে ছাড়া কখনও বাঁচে না
অকবিদের হাতে কবিতা তাই এক আকালিক ফল, বলা যায় অশ্বডিম্ব
আর কবিদের হাতে তারাই হয়ে ওঠে আষাঢ়ের কদম্ব
এক; ছড়ায় কবিতার সুবাস আকাশে বাতাসে
যারা কবি নয়, অকবিও নয়, শুধুই মানুষ-তারা কেন ছুটে আসে?
গুচ্ছ-গুচ্ছ তারা হাতে নেয় তুলে
সাজায় প্রিয় স্থানটুকু, হয়তবা মনের সুখে গুঁজে রাখে চুলে

এটাই কি তাহলে কবিতা? কবিতার ভেতরের সবিতা!
তাই কি নষ্টকরণের দায়ে যুগেযুগে অভিশপ্ত হলো কবি ও কবিতা?
মহামতি প্লাতো কবিকে নিষিদ্ধ করেছেন তার রিপাবলিকে
বলেছেন-কবিরা পাগল, এদিকে সেদিকে
কেবলই পাগলের মতো ঘুরে বেড়ায়
তাই রাজ্যের জন্য তাদের প্রয়োজনীয়তা কোথায়?
বিধাতাওতো বলেছেন-কবিরা বিভ্রান্ত, তারা নির্জনে
বিভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ায় বাদাড়ে-বনে
দেশও কি তাই ভাবে? হয়তবা ভাবে;

একজন লেখক-কবিতো বলেছেন সে-ই কবে-
দেশ চালাতে গাদাগাদা
সচিব লাগে, লাগে মহাপরিচালক, সাদাসাদা
কালাকালা গাড়ী লাগে হাজার হাজার
লাগে ৪৬০ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার
এমনকি দেশ চালাতে নাকি একটি পতিতালয়ও লাগে, লাগে সবই
দেশের শুধু প্রয়োজন নেই একজন কবি!

আমি তাই কবি হতে চাই না; এ যে বড়ই আকাল কাল!
আমি জানি-একটি অনিন্দ্য কবিতা মানে একটি পরিপূর্ণ মোহজাল,
যার ফাঁদে পড়ে মানুষ ক্রমান্বয়ে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়
যত উৎপাদনশীলতা তার, এক সময় সবই হারায়
তাই কবি আজও সমাজে এক ঘৃণ্য গালি ছাড়া কিছুই দেখি না
‘তাই খোদার কসম! আমি কখনও কবিতা লিখি না’

আমি শুধু রূপকের জরিন-সূঁতায় কিছু দ্রোহের মালা গেঁথে যাই;
কেবলই কিছু শব্দের বোমা ফাঁটাই
আর তাবৎ বোধের বারুদে আগুন লাগাই
যত আগুন লাগাই