গ্রেগরী ক্যালেন্ডার থেকে উঠে আসা
এক সমুদ্র খুনে ভাসা
আজ আমাদের সেই গর্বিত ১৬ই ডিসেম্বর
চারিদিকে বয়সী বিজয় মিছিল, শুনি বিজয়ীর বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর
অনর্গল। চারিদিকে যেন আজ লাল আর সবুজের মেলা
কেবলই লাল আর সবুজের সমন্বয়ের খেলা
দেখে যাই; কপাল থেকে ঠোঁট হয়ে ইনার-আউটার বেশে
এমনকি জুতা আর কেশে-কেশে
নিস্তব্ধ অথচ দূরন্ত এক খেলা। পথেপথে আমায় আজ জনেজনে
জিজ্ঞাসে -এই সাদাকালো বেশে এই বিজয়-উৎসব ক্ষণে
আজ কি মানায়? আরো জানতে চায় অনেকেই হেসেহেসে-
কী-ই বা জানান দিতে চান আজ এই বেশে?
অবাক বিস্ময়ে কেবলই সকলের অবাক কথা শুনি
আর উত্তেজিত সময়ের হার্টবিট মেপেমেপে চেতনার ঢেউ গুনি
কেবলই ভাবি- সকলের কী আজব এক চাওয়া;
এই লাল-সবুজের মাতাল হাওয়া
গাদাগাদা গায়ে মেখে, এই রহস্য-সত্তা আজ তোমাদের কেউ হোক,
যে আমি আজ আপাদ-মস্তক এক কালো পাথরের শোক
হয়ে আছি। ভেতরে যার শোকের গলিত লাভা কেবলই উদগীরণ চায়
বাহিরে যার ক্ষোভের সুনামি নিরন্তর বয়ে যায়
চারিদিকে। আমি তাই বিনীতভাবে জানতে চাই আজ অনেকের কাছে-
এই লাল-সবুজের মাঝে কী এমন আছে!
এ যে বিজয়ের প্রতীক, প্রিয় পতাকার নাম
এটাই আমাদের স্বাধিনতা, স্বাধিনতা অবিরাম-
এ কথাতো জানি
তোমাদের মতো আমিও অন্তরে মানি
কিন্তু প্রশ্ন করি- এটুকুই কি সব, আর কিছু নয়?
লাল আর সবুজ অঙ্গে ধারণ করলেই দেশ-প্রেম হয়ে যায়?
এমন সস্তায়
কি দেশ-প্রেম পাওয়া যায়?
তবে এই মাটি, এই মানুষ, এই জনগণ
এই সোনা-সোনা সময়, এই বহতা জীবন
এসব কি কিছুই নয়
এই ঘন্টা কয়েকের রং করা রঙের মেলায়?
-যেখানে মাটি আজ নানাভাবে ধর্ষিত
আর সোনার মানুষ(!) কেবলই নিপীড়িত,
চারিধারে। যেখানে জাতীয় জীবন একেবারে বিধ্বস্ত,
সময় রক্তাক্ত
অবিরাম। মানবতা, মানবাধিকার বিপন্ন দিকেদিকে
স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ কেবলই ফাঁকা, কেবলই ফিঁকে
বহতা জীবন যেখানে এক অনন্ত জিজ্ঞাসা-চিহ্ন হয়ে রয়
এক অস্থির বৈশাখি আকাশের ঠিকানায়
সেখানে লাল আর সবুজ কী অর্থ বহন করে
কেবলই উৎসব-আমেজে অঙ্গে ধরে-
আমি বুঝি না। যদি পরতে হয়, অঙ্গে নয়, অন্তরে ধরো
মানবতা, মানবাধিকার, সুশাসন, ন্যায়বিচার-এ সবের জন্য কিছু করো
দোহাই তোমাদের। শুধু লাল আর সবুজের জন্য নয়, কেবলই মাটি ও মানুষের জন্য মরো
যদি পারো, যদি পারো।
(১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ঢাকা)