আমার পরিবার যখন আমার মৃত্যুর খবর পাবে তখন সমস্ত আকাশ তাদের কান্নায় ভেঙ্গে পড়বে।
হয়তো ঠিক সেই সময়েই অপরিচিত ভদ্রলোক প্রথমবার বাবা হওয়ার খুশিতে হসপিটাল সুদ্ধ মিষ্টিমুখ করাবে।
আমি যে এই পৃথিবীতে নেই তাতে সে ভ্রুক্ষেপও করবে না।
সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে বন্ধু আত্মীয়রা ফেসবুকে শোক বিলাপের ক্যাপশনে আমার সাথে তাদের সবচেয়ে সুন্দর ফটোগ্রাফ আপলোড করবে আবার পরক্ষণেই প্রাণপ্রিয় নেতার বার্থডে উইস৷
হসপিটাল থেকে ফেরার পথে আমার লাশ বাহী ফ্রিজিং গাড়িটাকে পাশ কাটিয়ে সাই-সাই করে চলে যাবে হিন্দি গানের তালে নাচতে থাকা উদ্যোম যুবকদের ট্যুরের গাড়ি৷
বাড়ির উঠানে আমার লাশ গোসল চললেও পাশের বাড়ির মিন্টু আঙ্কেলের ছোট মেয়ের বিয়ের আয়োজনে ন্যূনতম ব্যাঘাতও ঘটবে না, উৎসব চলবে মহাসমারোহে।
ইতোমধ্যে মসজিদের মাইকে রটে যাবে একটি শোক সংবাদ...... ইন্না-লিল্লাহ....রাজিউন...।
মানুষ আসবে শেষ বিদায়ের ঠিক মিনিট দশেক আগে।
চলবে আহাজারি, আহা! এই অল্প বয়সেই চলে গেলো! তাদেরই কারো মুখ থেকে গদগদ করে বের হবে বেনসনের উৎকট গন্ধ।
সমস্ত আয়োজন শেষে খাটিয়া চলবে আমার অস্তিত্ব বিলিনে আর পাড়ার ছেলেদের তাড়া খেলার মাঠের।
'মুখে বিরক্তির ছাপ! কি আপদ রাস্তা আটকে খাটিয়া নিতে হবে কেনো!'
দিন.. সপ্তাহ.. মাস.. সবাই ভুলে গেলেও গুটিকয়েক প্রিয় মানুষ ও পরিবারের কান্না তখন বিলাপে রূপ নিবে।
আমার নামে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজনও হতে পারে।
এরপর..... এরপর.. সবাই ভুলে যাবে যেনো কখনো আমার অস্তিত্বই ছিলো না।
আমি মরে গেলে কি হবে এই পৃথিবীর!
শুধু কিটগুলো অতিরিক্ত ৭০ কেজি মাংসের লোভে ছুটবে দ্বিগুণ গতিতে আর সব চলবে আগের মতোই।