শেখ রাসেলের জন্ম দিন উপলক্ষ্যে কবিতা-
প্রাণ ভিক্ষা চাইনি
আমি রাসেল, বঙ্গবন্ধুর সন্তান
বজ্রকন্ঠের সন্তান
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির সন্তান
জাতির পিতা মৃতুঞ্জয়ী মুজিবের ঔরসজাত।
আমার মৃত্যু নেই, বুলেট বিদ্ধ হয়েছে, মরণ হয়নি
আমার রুধিতে ভীরুতা নেই, কাপুরুষতা নেই,
নেই বিশ্বাসঘাতকতা।
আমি বন্দুকের সম্মুখে নুয়ে পড়িনি,
কান্না করিনি, প্রাণ ভিক্ষা চাইনি; আমার পিতার মতো।
নীরব নিথর দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম
স্মিত হেসে ধিক্কার দিয়েছি অশুর কাপুরুষদের
ধিক্কার দিয়েছি কৃতঘ্নদের।
ব্যর্থ হয়েছে হন্তারকেরা; পবিত্র আত্নার মৃত্যু হয় না।
আমি সুবহ সাদিকের স্নিগ্ধ প্রভা
দিবসে ছড়িয়ে পড়ি।
তোমাদের বিবেকের মাঝে আমি গুঞ্জর করি সদা
কী অপরাধ ছিল আমার?
কাপুরুষতা, কৃতঘ্নতা, পাপ বোধের বহ্নি হন্তারকদের
পুড়িয়ে মারছে।
আমি রাসেল, মৃত্যুজয়ী প্রাণ।
আমি ছিলাম পিতার নির্ভীকতা
বেঁচে থাকার আশা, অন্ধকার কারাকক্ষের আলো
একছটা আনন্দ, মায়ের মুখের শুভ্র নির্মল হাসি।
আমি অনিমেষ নয়নে চেয়ে থাকি
যখন কোনো শিশুকে মা গভীর মমতায় আদর করে।
হায়! কতদিন মার আদর পাইনি,
কতদিন বাবার কোলে চড়িনি,
কতদিন বোনের কোলে,
আমার ইচ্ছা করে বাবার হাত ধরে হাঁটি।
আমি ছুটে চলি দুরন্ত ছেলের চড়কার সাথে
রেইসকোর্সের ময়দানে, লালইটের কারাগারে
খেয়াঘাটে জলে সমীরণে, শিশির ভেজা মাঠে
আম-কাঁঠালের বনে।
মিছিলে মিছিলে শ্লোগান তুলি-
রাস্তায় শুয়ে থাকা অস্পৃশ্য শিশুটির সাথে
আমি খেলা করি মাঠে-ময়দানে।
আমি আলতো পায়ে হেঁটে বেড়াই টুঙ্গীপাড়ায়
শ্বেত মর্মর পাথরের মেঝেতে
বাবার শিয়রে বসে থাকি নীরবে
শুয়ে থাকি মাটির শিতল স্পর্শে
বসে থাকি ঘোর দুপুরে অশ্বত্থ বৃক্ষের ছায়ায়।
চেয়ে দেখ, আমি শিশুর স্মিত হাসি, মায়ের মমতা মাখা চুম্বন
বাবার হাতের ভরসার পরশ।
আমি মৃত্যুজয়ী প্রাণ, আমি বেঁচে আছি, থাকবো ।
মৃত্যু আজ ভীত-সন্ত্রস্ত, আমার কাছে পরাস্ত
আমি শেখ মুজিবের ঔরসজাত।
-মাহমুদ লতিফ