ঘুমিয়ে পড়লে নাকি ?
সম্মুখে তব রয়ে গেছে আজো অনেকটা পথ বাকি;
শপথ তোমার ভীম দুরাশায়
জ্বালবে প্রদীপ স্বপ্ন-আশায়
পঙ্খিলতার ঘোর কুয়াশায়
                 ভুলে গেলে আজ তা কি ?
তোমার পানে চেয়ে আছে শত কান্না জড়ানো আঁখি।

এসো এসো রণবীর
ক্ষ্যাপা প্রলয়ে ভেঙ্গে ফেল আজ জীর্ণ পাতার নীড়;
শত জননীর মহা ফরিয়াদ
গুমরিয়া ফিরে বিদীর্ণ নাদ
ক্রন্দন ঢেউ উছলিছে বাঁধ-
                 কল্লোল বারিধির,
আর কতকাল ঘুমাবে দামাল নিশ্চুপ গম্ভীর।

জেগে ওঠো দিকপাল!
জিঞ্জির পায়ে নকশি কাঁথায় কাটিয়েছ মহাকাল;
মহা ঝঞ্ঝায় ভেঙ্গে গেছে দ্বার
অমা নিরাশায় খেয়া পারাপার
পিশাচের ফাঁদে কাঁদে হাহাকার-
                 তরঙ্গ উত্তাল,
ঘোর তমসায় দিশাহীন তরী; ধরিবে কে বলো হাল।

চেয়ে দেখ ওই দূরে
দূর্জয় প্রাণে হাঁকিছে নবীন বিদ্রোহী রণ সুরে;
দামামার তালে নাচিছে নকীব
জেগেছে সাগর দূর অন্তরীপ
হেসেছে অরুণ ঊষার প্রদীপ
                 পিশাচ বক্ষ পুড়ে,
নিপিড়ীত ওই মজলুম যত দাঁড়ায়েছে ফের ঘুরে।

জেগে আছে দেখ আজি
নিশি বলাকার শূভ্র মিছিল সুখের নিদ্রা ত্যাজি;
রক্তিম রবি সিন্ধুর তীরে
জ্বালায়ে আগুন জালিমের শিরে
ছুটিছে দামাল শৃঙ্খল ছিড়ে
                 রণ ভৈরবে সাজি!
মুক্তির তরে ময়দানে দেখ রেখেছে জীবন বাজি।

ঘুনে ধরা সেই বাঁশি
নব প্রেরণায় জেগেছে আবার ভীম রাগে উদ্ভাসি;
বাজ-শকুনের তীক্ষ্ণ বেহাগ-
নিভু নিভু ওই পিশাচের হাক
তবু বাঁজে আজ বেদনার রাগ
                 কাঁদে সাম্যের চাষী,
তুমি বিনে আজ জালিমের গলে পড়াবে কে নীলফাঁসি।