শীতল হাওয়ার পরশ নিয়ে হেমন্তকাল আসে,
শিশিরবিন্দু আসর জমায় স্নিগ্ধ ভোরের ঘাসে।
ঝলমলানো রূপের বাহার মুক্তোদানার মতো,
মন হৃদয়ের সাথে সাথে ভেজায় গাঁয়ের পথও।
শিশির মেয়ে ঘোমটা টানে সূর্য ওঠার ক্ষণে,
কাস্তে হাতে কৃষক ছোটে আনন্দ তার মনে।
সবুজ ক্ষেতে হলদে সোনা স্বপ্ন রাশি রাশি,
আমন ধানে ভরবে গোলা চাষীর মুখে হাসি।
কচাৎ কচাৎ ছন্দ তালে কাটছে ধানের গোছা,
দুঃখগুলো এরই সাথে হচ্ছে কেবল মোছা।
ধানের আঁটি মাথার উপর আলপথে সেই চলা,
ক্যাঁচর ক্যাঁচর বাগের শব্দে প্রাণ করে উতলা।
ব্যস্ত সময় পল্লীবালার ক্লান্তিতো নেই মোটে,
মাড়াই করা ধানের মাঝে স্বপ্নগুলো ফোটে।
কুলোর উপর ধানের নাচন সারা উঠোন ছেয়ে,
আসবে জামাই শ্বশুরবাড়ি, নাইওর বেশে মেয়ে।
ঢেঁকিঘরের ধাপুর ধুপুর অনেক মজা হবে,
নবান্নেরই উৎসবে আজ উঠবে মেতে সবে।
ফিরনি পায়েস ক্ষীরের ঘ্রাণে মন উতলা করে,
ধুম পড়েছে পিঠা পুলির পাড়ার সকল ঘরে।
সন্ধ্যা হতেই শিশির মেয়ে পালকি চড়ে আসে,
শিউলি মালা খোঁপায় গুঁজে মুখ বাঁকিয়ে হাসে।
মধ্যরাতের স্বপ্নগুলো ছাতিম ফুলে ছাওয়া,
হিমের মাঝে উষ্ণ ছোঁয়া হয়নি কোথাও পাওয়া।
উত্তরীয় বাতাসে আজ দুলছে লাউয়ের ডগা,
বিলের ধারে মাছের খোঁজে মাছরাঙা আর বগা।
গঙ্গাফড়িং ওড়ছে যেনো কাট্টা ঘুড়ির মতো,
হেমন্তেরই রূপের বিভা— দেখবে কোথা অতো!