ছেলেবেলায় পাখি ঠুকরানো ফল খেতাম
বাগানে খেজুরের মাদুর বিছিয়ে অপেক্ষা করতাম।
কখন ঝড় উঠবে অথবা দমকা বাতাস,
অহংকার ছিল না, শিশুদের মন ছিল সুউচ্চ আকাশ।
একটা পাকা আমের জন্য সারা দুপুর কেটেছে,
গ্রীবা উঁচু করে তাকিয়ে থাকতাম পাখিরা হেসেছে।
আমাদের শৈশব ছিল শিশিরে ঢাকা ঘাসফুলের মত,
প্রভাতের রোদে লাল ফুলগুলো তখন কৈশর হয়ে যেত।
কোথায় আমাদের খেলার সঙ্গী কোথায় শৈশব বেলা?
বসন্তের আগে পাতাবিহীন বৃক্ষের মতো অসুন্দর মেলা
তবু আশাবাঁধি বুকে, আবার অরণ্যে পাতা গজাবে,
আবার মাদুর পেতে ফল বাগানে সহপাঠীরা বসবে।
পরিত্যক্ত পানিতে পাটের আঁশ জাগ দিত পুকুরে,
সেই আশ সোনালী রং হয়ে যেত সোনালী দুপুরে।
পাটের গন্ধ ছিল আমাদের পরিচিত স্মৃতির মতন,
সেই ঘ্রাণে কৃষক পাড়ায় উড়তো বিজয় কেতন।
ফসল বিক্রির টাকা দিয়ে মুরব্বিরা আনতো ইলিশের জোড়া,
স্মরণীয় গল্প আমাদের জীবনের অন্তহীন বেদনার গোড়া।
স্মৃতির ভেতর এইসব ফ্যাকাশে কবিতার অনুলিপি,
হয়তো একদিন ছাপা হবে কালো হরফে স্মৃতির পাণ্ডুলিপি।
তবু থেকে থেকে সেই সব মুখ ভেসে আসে বারবার,
সেইসব প্রিয়জন চলে গেছে বহুদূর, আসিবে না আর।
ধানক্ষেতের ঢেউএর মত দোল খায় বুকের ভিতর,
স্মৃতিফলক হয়ে পড়ে আছে একেক জন হায়পাষাণ কবর।