মা তুমি গোপালগঞ্জকে কেন ভালোবাসো,?
পূর্ব পুরুষের ভিটা বাড়িতে কেন বারবার ফিরে আসো?
মেঠো পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে কেনইবা আনমনা হয়ে যাও?
বাঁশবাগান পুকুরপাড়,খুঁজে দেখো সাথীদের ফিরে যদি পাও।
মা, সূর্য ডুবুডুবু, পড়ন্ত বিকেলের পরে শান্ত সন্ধ্যায়।
জানি জেগে উঠছে তোমার বুকের ভিতর শৈশব এইনিরালায়
স্মৃতিতে ভেসে আসে প্রিয় বোন হাফিজা,সিরি,জবি,রুমি
শুয়ে আছো আজ বিষন্ন চোখে,, কোথায় প্রিয় বোন হুরি?
আর তোমার চোখের স্পন্দন শাহ হালিম,হায় জলেশ্বরী বন,
ধরিত্রীর মত মায়া ছিল তার, সমুদ্রের মতো মন..!
অন্ধকার ছাড়া কোনো ভবিষ্যত নেই,নেই যোগ্য উত্তরাধিকার
আমাবস্যার অন্ধকার ঘোচাবে কবে, নামবে আলো পূর্ণিমার।
স্নেহের জাভেদ চলে গেছে কবে,অপূর্ব ফর্সা মুখ
মাটির ঘরে শুয়ে আছে মা জোহরা,আহা দাফন দিয়েছো সুখ
বড় দুলাভাই হাসেম লস্কর নেই,নেই আতিউর রাসুল
হান্নান ভাই নেই,নেই আদরের বোন-জামাই সৈয়দ মুকুল।
শাহজাদীর মৃত্যুতে কেঁদেছিলে মা,কতদিন অগনন
স্নেহের মুরাদ চলে গেছে,চলে গেছে রাজা, চোখের দুই নয়ন
স্বামীর মৃত্যুতে বুক ভেঙেছে,হায় আলী শোকে ছেয়েছিল গ্রাম
বাবা মোতাহার মুর্ছা যেত পরী পরী বলে স্নেহের ডাকনাম।
জলিল মামা নেই শুকুর ভাইও নেই, নেই আঙ্গুরের মা
রহিমা ফুফু চলে গেছে আগেই, চলে গেছে ওহাব মামা।
বাবা-মা, মামা-মামী নেই, নেই প্রিয় নুসরাত,শোকে ম্রিয়মাণ
পুরনো দিনের অনেকেই নেই,পথের বাঁকে বাঁকে বকুলের ঘ্রাণ
এখনো জয়নগর স্কুল মাঠে, রোদেরা দলবেঁধে থামে,
বর্ষায় বালিকারা নৌকায় চড়ে না,স্কুল ভ্যানে নামে।
মেঠো পথ এখন পাকা রাস্তা, গ্রামেও ডটকমের মেলা,
সেই শিমুল ফুল, এখনো ফুটলেও, নেই শকুনের খেলা।
ঝুপড়ি ঘর নেই এখানেও পাকা ঘর, জীবনের নতুন উম্মাদনা
কুপি জ্বলে না,বিদ্যুতের বাতি জ্বলে,জলে আলোর কণা।
রাতের অহংকার নেই, ভূত-পেতের ভয় নেই বললেই চলে
দূর-দূরান্তে এখন মানুষ কথা কয়,ইন্টারনেট ভিডিও কলে,।
এখনো তোমার ব্যাসপুর থেকে ফেরার পথে অশ্রুসজল চোখ
শিশিরের ফোটার মত কান্না ঝরে, নামছে বিষণ্ণ শোক।
এত ভালোবাসার গ্রাম তোমার, এত পবিত্র ধূলি
স্মৃতির মায়ায় বেঁচে থাকো মা,কোথায় অভিরাম কুলি!?