আজ আবার ৩৯ বছর আগের শীত জেগেছে,
ভোরের শিশিরের সঙ্গে কুয়াশাও ঢেকেছে।
উটের গলার মত গ্রীবা উঁচু করেও দেখা যায়নি সূর্য,
হৃদপিণ্ড ঠান্ডা হচ্ছে ঘাড় ও পিঠ হয়ে আসছে কুজো।
ক্লান্তি ঘরে, খাবারের খোঁজে রাজ হাঁসগুলো নামেনি,
এবারের মতো দিনে কখনো গাড় অন্ধকার আসেনি।
সুদীর্ঘ জীবনে সূর্যের জ্বলন্ত চোখে যেন বরফ জমেছে,
চায়ের দোকানেও মনে হয বিকালেই আমাবস্যা নেমেছে
প্রতিবাদের ঝাঁজালো ভাসাতেও এখন দেখছি নর্মতা,
উৎপীড়িত পান্ডুলিপিতে, দিগন্ত কাপানো কবিতার পাতা
মনে হয় সারা দেশ মঞ্চ ভেঙে পড়ার শোকে নেমেছে,
এমন বিহবল শোক বিপন্ন বদ্বীপে আগে কে দেখেছে?
মনে হয় আজ আবার ৩৯ বছর আগের শীত জেগেছে,
পিতার লাশ বহনের কফিনের সঙ্গে দুর্দশার বৃষ্টি নামছে
আমাদের কবিতায় কোন অভ্যুত্থানের ভয় নেই,
শুধু একটু উষ্ণতার জন্য এক টুকরো কম্বলের খোঁজ দেই।
ওহে শ্রমিক ভাইয়েরা পথে প্রান্তরে আগুন জ্বালাও,
তারপর একখণ্ড জলন্তকাঠ আমাদের হাতে তুলে দাও।
এখন ভাতের চাইতেও এ জনপদে উষ্ণতার খুব দরকার
মনে হচ্ছে পুরো দেশটা যেন মৃত্যুর হিমঘর।
অসহায় সম্বলহীন চরাচরে কে দিবে গরম কাপড়?
ক্ষুধা ও শীতের কান্না ঢুকরে উঠে শিশুর ভিতর।
ওহে দানশীল মাননীয় নেতৃবৃন্দ ঘর থেকে বের হন,
শহরের রাস্তায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়েছে আদম সন্তান
ওই দেখো রুটির মতই মুখে বিড়ি পুরে পাহারাদার,
তবু শহরের রাস্তায় কনকনে শীতে ব্যস্ত ঝাড়ুদার।
এসব নিরন্ন বস্ত্রহীন মানুষের দেশ প্রেম,
সত্যই পাথরে ফুল ফোটার মত, শ্রদ্ধা জাগে অবিরাম।
যারা গরিবের অর্থ লুট করে দেশটাকে করছে বিরান,
মরুভূমির মধ্যে গড়ে ওঠা বুরুজ আল খলিফা বেড়াতে যান।
সেইসব সোনা দানা হীরের মালিকেরা কেউ,
কান পেতে শোনো তোমাদের দিকে আসছে সমুদ্রের ঢেউ।
আজ আবার ৩৯ বছর আগের শীত জেগেছে
কবরে বাবার লাশ রেখে আহা মনে হয় ফিরছে।
সেই কিশোর বেলার দুঃখ, আবারও এসেছে কি ফিরে?
হায় ! ধনীদের বিলাসী জীবন, গরিবের পাজরের হাড়ে।