এইতো সেদিন ইচ্ছের বিরুদ্ধে ,
আক্রান্ত হওয়ার আশংকায়
ভুমিষ্ট ভুমি থেকে পালিয়ে এসে
নতুন সভ্যতায় নিজেকে মানিয়ে নেবার প্রাক্কালে;
একদিন প্রত্যুষে অবিরাম তুষারকণার বর্ষনের মধ্য দিয়ে পাতাল ট্রেনে এসে নামলাম ব্যাস্তিল ষ্টেশনে।
মাটির গভীর থেকে উঠতেই
আকাশ চুম্বি একটি স্মৃতি স্তম্ভ আমার দৃষ্টিকে মায়াবী ভালবাসায়
আলোর গতির মতো কাছে টেনে নিল।
সোনালী রংয়ে অনেক গুলো নাম
ঠিকমতো পড়তে পারছিলামনা ।
মিনারের চূড়ায় নগ্নদেহী ডানা ওয়ালা ফরাসীদের বিশ্বাসের প্রকাশ ।
আমি অতি দ্রুত ইতিহাসের মায়াবী জালে মিশে গিয়ে বিপ্লবী জনতার গগণ বিধারী শ্লোগানে নিজেও বিপ্লবী হয়ে উঠলাম।
অধিকার কাকে বলে, সেদিন শোসনের বাতিঘর ব্যাস্তিল দূর্গ হাড্ডিসার বস্ত্রহীন ক্ষুর্ধাত প্রতিবাদে জনতা গুড়িয়ে দিয়ে লুই চৌদ্দের মাথা উড়িয়ে তাবৎ বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছিল।
সেদিনের সেই বিপ্লবী জনতার অর্জিত স্বাধীনতা,সমতা আর ভ্রাতৃত্ব
আজও গোটা পৃথিবীর সংগ্রামী মানুষের প্রেরনায় বার বার জ্বলে ওঠে।
আমি সেদিন সেইসব বিপ্লবীদের মাঝে বিপ্লবের ঘোষক কিংবা সফলতার পিতা বলে কাউকে দেখিনী ।
সবাই জোটবদ্ধভাবে বিপ্লবের চেতনাকে ধারন করেছিল।
শত শত বছর অবিকল বিপ্লবের উত্তর প্রজন্ম তা হৃদয়ে লালন করে আসছে।
কল্পনার আকাশের আমি যখন পৌঁছে যাচ্ছিলাম ;
ঠিক সেই সময় আমার মনে হলো আমার মাথার উপরে কে যেনো অর্জিত অধিকারের প্রাপ্যতা ধরে আছে।
বর্ষিত তুষারে ব্যাস্তিলের পাদদেশ সফেদ রংয়ে যেনো মনে হচ্ছিল বরফ নদী।
চেয়ে দেখি একজন বৃদ্ধা , যিনি আমাকে অবিরাম তুষার বর্ষনের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিজের কষ্টটুকু ভুলে গিয়িছিলেন ব্যাস্তিল বিপ্লবের নিখাদ প্রেমিক হয়ে।
১৪ জুলাই ২০১৬
প্যারিস , ফ্রান্স ।